জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর ইউপি সদস্য মো. আছান আলীকে নৃশংসভাবে হত্যা মামলার পলাতক অন্যতম আসামি মো. লাইজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তিনি জামালপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নের লক্ষ্মীরচর গ্রামের মোস্তফার ছেলে। র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ও র্যাব-১৪, সিপিএসসি, গাজীপুরের যৌথ আভিযানিক দল ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে এ অভিযান পরিচালনা করেন। র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ভিকটিম নিহত ইউপি সদস্য আছান আলীর সাথে মামলার বিবাদী পক্ষের জমি জমাসহ বিভিন্ন স্থানীয় ও রাজনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে শত্রুতা চলমান ছিল। এরই জের ধরে গত ৩১ আগস্ট বেলা আনুমানিক পৌনে ১২টার দিকে আছান আলী মোটরসাইকেলে ইউনিয়ন পরিষদের কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নের রায়েরচর মোল্লাপাড়ার মুসলিম মেলেটারিরর বাড়ির পাশে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছা মাত্রই লাইজুনহ (৩৬) অন্যান্য আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রসহ আছান আলীর পথরোধ করে। আসামি লাইজুসহ অন্যান্য আসামিরা আছান আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে আহত করে। এ সময় আসামিদের মারপিটে ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত আছান আলীর ব্যাপক রক্তক্ষরণ ঘটে।
এ সময় ভিকটিমের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুততার সাথে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ওইদিনই রাত আনুমানিক ৯টা ৫০ মিনিটে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আছান আলী। পরবর্তীতে ২ সেপ্টেম্বর নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম (৫২) বাদী হয়ে দন্ডবিধি ১৪৩/১৪৮/৩০২/১১৪/৩৪ ধারায় জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৪/৫৩৯।
র্যাব আরও জানায়, ঘটনার পর থেকে মামলাটির আসামি লাইজু গ্রেপ্তার এড়াতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে চলে যান। ঘটনাটি ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট এবং অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়ায় অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এরূপ নেক্কারজনক ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তারে মাঠে নামে র্যাব।
র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে ও স্কোয়াড কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ টি এম আমিনুল ইসলামের উপস্থিতিতে র্যাবের একটি আভিযানিক দল এবং র্যাব-১, সিপিএসসি, গাজীপুরের যৌথ অভিযানে ১৭ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ৯টা ৫ মিনিটের দিকে জিএমপি গাজীপুর সদর থানার সালনা বাজারের পাকিস্তানি গার্মেন্টস সংলগ্ন এলাকা থেকে হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান পলাতক আসামি লাইজুকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। আসামি লাইজুকে জামালপুর সদর থানায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যার মত জঘন্য অপরাধ কর্মকাণ্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সমাজ ও দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।