নিজ দলে অতিরিক্ত ব্যাটার-বোলার থকায় বাংলাদেশ দল বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। যে কারণে ভারতের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে বিশ্বাস করেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের অনুশীলন সেশন শেষ হবার পর সাংবাদিকদের হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমরা অনেক পেসার নিয়ে এসেছি এবং ভালো মানের পেস বোলার পেয়েছি। আমরা সত্যিই ভালো অভিজ্ঞ স্পিন আক্রমণ পেয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাশাপাশি ব্যাটিংও ভালো। দু’টি কারণে আমাদের ব্যাটিং গভীরতা আছে। এক, আমাদের দুই স্পিনার স্বীকৃত ব্যাটার। যাদের টেস্ট সেঞ্চুরি আছে। এরপর দুই উইকেটরক্ষক, যারা আমাদের প্রধান ব্যাটার। তাই এই সিরিজের জন্য দলের ভারসাম্য সত্যিই ভালো এবং এটি আসলে আমাদের অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। যাতে আমরা সিরিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি।’
এখন পর্যন্ত ১৩টি টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এরমধ্যে ১১টিতে ভারতের জয় ও ২টি টেস্ট ড্র হয়। বৃষ্টির কারনে বেশিরভাগ সময় খেলা না হওয়ায়, ড্র হয়েছিলো টেস্ট দু’টি।
তবে এবার ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয়ের ব্যাপারে দলের সকলেই আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু কাজটি কঠিন হবে। কারন ৪ হাজার দিন ধরে ঘরের মাঠে কোন টেস্ট সিরিজ হারেনি ভারত। গত ১২ বছরে ঘরের মাঠে টানা ১৭টি টেস্ট সিরিজ জিতেছে। এই সময় মাত্র চারটি টেস্ট ম্যাচ হেরেছে ভারত।
ভারত মাটিতে খেলাটা কঠিন হলেও, সদ্যই পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আমি মনে করি, এই সময়ে এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে ভারসাম্য পূর্ণ দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে পারফরমেন্সের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারলে ভারত সফর থেকে সাফল্য পাওয়া সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবশ্যই, পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয় আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। সিরিজের ফলাফলের কারণে নয়, আমরা ঐ সিরিজে যেভাবে খেলেছি, বেশ কিছু পরিস্থিতি ভালোভাবে সামাল দিয়েছিলাম। আমরা দুই টেস্ট ম্যাচেই ব্যাকফুটে ছিলাম। এরপর আমরা ঘুড়ে দাঁড়িয়েছি এবং বিভিন্ন সময়ে অনেকেই অবদান রেখেছে। যা এই সিরিজে আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে।’
২০১৯ সালে সর্বশেষ ভারত সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দু’টি ম্যাচই আড়াই দিনের মধ্যে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে এবার আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে, তাই প্রত্যাশার চাপও বেশি।
চাপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন হাথুরুসিংহে, ‘এই চাপকে সুবিধা হিসেবে দেখছি। আমার মনে হয়, এটা আমাদের অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ করে এবং আরও বেশি সামনে তাকানোর সুযোগ করে দেয়। তখন আমরা নিজেদের শক্তি, সীমাবদ্ধতা ও অবস্থান সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারি। কিন্তু আমরা ভারতের মত বিশ্ব সেরা দলের বিপক্ষে তাদের মাটিতে খেলতে আসলে সত্যিই উৎসাহিত হই। এখনকার ক্রিকেটে এটা সেরা চ্যালেঞ্জ।’
ভারতের বিপক্ষে দলের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান জ¦লে উঠবেন বলে আশা করছেন হাথুরুসিংহে। তিনি জানান, সাকিবের অলরাউন্ড দক্ষতার কারনে কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ব্যাটার এবং অতিরিক্ত বোলার নিয়ে খেলতে পারছে।
হাথুরুসিংহে বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সবসময়ই বড় ভূমিকা পালন করে সাকিব। আমাদের দলে ভারসাম্য রাখেন তিনি। তার অলরাউন্ড দক্ষতার কারনে আমরা একজন অতিরিক্ত বোলার বা অতিরিক্ত ব্যাটার খেলাতে পারি। সম্ভবত দীর্ঘদিন ধরে খেলা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন সে। সদ্যই কাউন্টি ম্যাচ খেলে আসছেন তিনি। আমরা তাকে ভালো ফর্মে দেখেছি। শুধুমাত্র দক্ষতা নয়, দলে অনেক কিছু নিয়ে আসে সে।’
১৯ সেপ্টেম্বর থেকে চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট এবং ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে কানপুরে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু করবে বাংলাদেশ-ভারত।