জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
শেরপুর জেলা কারাগার থেকে পলাতক একটি হত্যা মামলার ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত আসামি আ. সালাম ওরফে গারো সালামকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব ১৪, সিপিসি-১, জামালপুর। তার বয়স ৬০ বছর। শেরপুর জেলা সদর উপজেলার চান্দেরনগর এলাকার মৃত ফছন আলীর ছেলে তিনি। ১১ সেপ্টেম্বর রাতে এ অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব কর্তৃপক্ষ।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পতনের পর ৫ আগস্ট বিকেল অনুমান ৪টার দিকে কয়েক হাজার দুষ্কৃতিকারী শেরপুর জেলা কারাগারে আক্রমণ করে। এ সময় আক্রমণকারীরা বিবিধ স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি সাধনসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বিভিন্ন মামলার প্রায় পাঁচ শতাধিক কয়েদিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।
জেল থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানি, শেরপুর জেলা কারা কর্তৃপক্ষ এবং শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সরবরাহ করা পলাতক কয়েদিদের তালিকা সংগ্রহ করে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে র্যাব-১৪। ইতিমধ্যে পলাতক আসামিদের কয়েক জন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
এরই ধারাবাহিকতায়, র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানি স্থানীয় সোর্সের সহায়তায় একটি হত্যা মামলার দায়রা নং-৩১/৯৯, ধারা-৩০২, মামলায় কারাদণ্ডে ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত পলাতক আসামি আ. সালামকে (কয়েদি নং-৭১৭৪/এ) আইনের আওতায় আনার জন্য তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে। অবশেষে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কয়েদি আ. সালাম শেরপুর জেলা সদর উপজেলার শিমুলতলা বাজার এলাকায় অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হয় র্যাব। ১১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার মেজর মো. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে এবং স্কোয়াড কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ টি এম আমিনুল ইসলামের উপস্থিতিতে র্যাবের একটি আভিযানিক দল শেরপুর জেলার সদর উপজেলার শিমুলতলা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে পলাতক কয়েদি আ. সালামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। কয়েদি আ. সালাম দায়রা নং-৩১/৯৯, ধারা-৩০২, মামলায় কারাদণ্ডে ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদী। পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য শেরপুর জেলার সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে তাকে।
র্যাব আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আ. সালাম ঘটনার দিন অন্যান্য কয়েদিদের সাথে কৌশলে শেরপুর জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যান এবং শেরপুর জেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলায় আত্মগোপনে থাকেন। জেল পলাতক এসব হাজতি ও কয়েদীদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাবের জোড় অভিযান অব্যাহত থাকবে।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গী ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যার মত জঘন্য অপরাধ কর্মকাণ্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সমাজ ও দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।