নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় ২১ মাস বয়সী শিশু আব্দুর রহমানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া গ্রামের ভ্যানচালক সুজন আকন্দের ছেলে।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ভ্যানচালক সুজন আকন্দ তার শিশু সন্তান আব্দুর রহমানকে অসুস্থ অবস্থায় ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মাদারগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে সকালেই শিশুটিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় শিশুটি মারা যায়। রাতে মৃত আব্দুর রহমানকে কোলে নিয়ে তার বাবা সুজন আকন্দ, চাচা তারিকুল ইসলাম ও অন্যান্য স্বজনেরা জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে চিকিৎসার অবহেলায় তার সন্তান মারা গেছে অভিযোগ করেন।
তারা অভিযোগ করে জানান, অসুস্থ আব্দুর রহমানকে ভর্তি করার পর তাকে কোন চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। নার্সদের বারবার বলা হলেও তারা তাকে অক্সিজেন দিতে সহায়তা করেননি। শিশু ওয়ার্ডে অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকলেও রোগীর স্বজনদেরকেই অক্সিজেন দিয়ে নিতে বলেন কর্তব্যরত নার্সরা। কিন্তু রোগীর স্বজনরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ না হওয়ায় শিশুটিকে অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হয়নি।শিশুটির বাবা সুজন আকন্দ চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে দোষীদের বিচার দাবি করেন তারা।
এদিকে শিশু আব্দুর রহমানের মরদেহ নিয়ে প্রেসক্লাবে আসার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। প্রশ্ন উঠে হাসপাতালে রোগীদের সেবা প্রদানে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্যদের যথাযথ দায়িত্ব পালন নিয়ে।
৮ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে এ ব্যাপারে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম ইফতেখার এ প্রতিবেদককে বলেন, খুব নাজুক অবস্থায় শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার জ্বর ও খিঁচুনি ছিল। এটিকে সেরিব্রাল মেনিনজাইটিস বলে। শুরু থেকেই যদি সঠিক চিকিৎসা করা না হয় তবে খিঁচুনি হয়ে শিশু মারা যায়। ভর্তির পরই শিশুটিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখেন এবং চিকিৎসা দেন। শিশুটির পীঠের নিচের দিক থেকে স্নায়ুরস নিয়ে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ছিল। শিশুটি খুব বেশি দুর্বল থাকায় দুই-একদিন এন্টিবায়োটিক দিয়ে কিছুটা সুস্থ হলে এই পরীক্ষা করার কথা ছিল। কিন্তু সন্ধ্যায় খিঁচুনি উঠে শিশুটি মারা যায়।
তিনি আরও জানান, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এ বিষয়ে জরুরি সভা করে এবং ঘটনার রাতে শিশু ওয়ার্ডের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।