মোস্তফা মনজু
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুর শহরের এভার গ্রীন লাইফ জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হাজরাবাড়ী সিরাজুল হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা মো. হারুন অর রশিদকে জামালপুর জেলা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সভাপতির (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মালিক সমিতির নির্বাচিত ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের আরও তিনটি শূন্যপদ পূরণ করা হয়েছে। ১ সেপ্টেম্বর রবিবার রাতে জামালপুর শহরের আমলাপাড়ায় মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কার্যকরী পরিষদে এই চারজনকে অন্তর্ভুক্তি করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
জামালপুর জেলা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির চলমান কার্যকরী পরিষদের রয়েছেন- সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক হারুনুর রশিদ (এভার গ্রীন লাইফ জেনারেল হাসপাতাল), জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম (জিয়া হেলা কমপ্লেক্স), সহ-সভাপতি ডা. এম আর সিদ্দিক (রামপুরা ডেন্টাল ক্লিনিক) ও সহ-সভাপতি এস এম মাসুদ আলম খোকন (সানরাইজ ডায়াগনস্টিক সেন্টার), সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী (জামালপুর সেন্ট্রাল হাসপাতাল লি.), সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. রুজুল আমীন মিজান (মুন নার্সিং হোম) ও মোঃ আব্দুল আউয়াল (প্রাইম মেডিকেল সার্ভিসেস), সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন রতন (দি সাউথ ভিউ হসপিটাল), সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এ বি এম মাকসুদুর রহমান সোহেল (বড়পীর হযরত আঃ কাদের জিলানী (রহ.) হাসপাতাল, কোষাধ্যক্ষ মো. কামরুল হাসান (আইডিয়াল জেনারেল হাসপাতাল), প্রচার সম্পাদক মো. আমিনুল হক (নিরাময় জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনোস্টিক), ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান হামিদী (তালুকদার ডায়াগনস্টিক এন্ড হেলথ কমপ্লেক্স), দপ্তর সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ (নিউ সিটি হসপিটাল), আপ্যায়ন সম্পাদক মো. রেজাউল করিম রেজা (আল রেজা জেনারেল হাসপাতাল) ও কার্যকরী সদস্য মো. জাকির হোসেন শামীম (জনতা জেনারেল হাসপাতাল)।

সংবাদ সম্মেলনে জামালপুর জেলা বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী জানান, এই মালিক সমিতির গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সমিতির সাধারণ সদস্য হযরত শাহ জামাল (রহ.) হাসপাতালের পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বুলবুলকে গত সাত মাস আগে সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকে তিনি গুটিকয়েক সদস্যকে নিয়ে পৃথক সমিতি গঠন করে মূল সংগঠন আমাদের এই মালিক সমিতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। একই সাথে সমিতির নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে রাজনৈতিক কারণে ফারুক আহম্মেদ চৌধুরীর অনুপস্থিতিতে ক্লিনিক মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম।
ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম তার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব পালনে অপরাগত প্রকাশ করায় ৩১ আগস্ট মালিক সমিতির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে মালিক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য অধ্যাপক হারুনুর রশিদকে সভাপতির (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। একই সভায় আরও তিনটি শূন্য পদ- সহ-সভাপতি, দপ্তর সম্পাদক ও কার্যকরী সদস্য পদ পূরণ করা হয়েছে। মালিক সমিতির কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন আসতে আর ১১ মাস বাকি আছে। বর্তমান পরিষদ আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। সবার সহযোগিতা কামনা করেন মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পী।

নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করে বলেন, বেশি সংখ্যক মালিক এই মালিক সমিতির সাথে যুক্ত। গুটিকয়েক মালিকদের জন্য সংগঠনের কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে না। একজন মালিককে এই সমিতির সাধারণ সমস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মালিক সমিতির সবাই সভা করে আমাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা চাই একটি সমিতিই থাকুক। আমরা সবাই এক সাথে কাজ করে যাই। যারা বর্তমানে বাইরে আছেন। আমরা তাদেরকেও মালিক সমিতিতে আনার চেষ্টা করবো। আমি আমার দায়িত্ব পালনকালে কার্যকরী পরিষদের আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাবো যাতে মালিক সমিতির সবাই মিলে সমিতিকে আরও শক্তিশালী করতে পারি। আমার এই দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক সমাজসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা চাই।
জামালপুর শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে রোগীদের বিভিন্ন হয়রানি, রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন জরুরি পরীক্ষা বা ল্যাব টেস্টের জন্য ঢাকার চাইতে বেশি মূল্য আদায় করাসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন সাংবাদিকরা।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে নবনিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা খুব শিগগির সভা করে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে আলোচনা করে ল্যাব টেস্টের মূল্যসহ স্বাস্থ্যসেবায় বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
সংবাদ সম্মেলনে জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. ইউসুফ আলী এবং প্রেসক্লাব জামালপুরের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও জামালপুর মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক অংশ নেন।