নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
শেরপুর জেলা সদরের চাঞ্চল্যকর সাজ্জাদ হোসেন (৩২) হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪ জামালপুরের একটি আভিযানিক দল। ৩১ আগস্ট দুপুরে এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তার দুই আসামি হলেন- প্রধান আসামী মো. রায়হান (৩০)। তিনি শেরপুর সদরের মধ্যবয়ড়া গ্রামের আ. সালামের ছেলে। অপর আসামি হলেন একই এলাকার সোহরাব আলীর ছেলে আঃ সালাম (৫০)।
র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্প থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, শেরপুর সদরের মধ্যবয়ড়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেনের সাথে একই গ্রামের মো. রায়হান ও তার পরিবারের লোকজনের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ লেগেরই থাকতো। সেই পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২১ আগস্ট বিকেলে প্রতিপক্ষ রায়হান ও তার বাবা আ. সালামসহ অন্যান্য লোকজন ধারালো দা, লোহার রড ও লাঠি-সোটা নিয়ে অতর্কিতভাবে সাজ্জাদ হোসেনের বসতবাড়িতে ঢুকে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে হামলাকারীরা উত্তেজিত হয়ে সাজ্জাদের বসতঘরের টিনের বেড়া ভাংচুর করে। এ সময় সাজ্জাদ হোসেন হামলাকারীদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে রায়হান তার হাতে থাকা ধারালো দা দিয়ে সাজ্জাদ হোসেনের ডান হাতের বাহুতে কোপ দেয়। একই সময় আ. সালামও ধারালো দা দিয়ে সাজ্জাদ হোসেনের বাম হাতের কব্জির ওপর কোপ দিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়াও অন্যান্য হামলাকারীরা সাজ্জাদসহ তার পরিবারের কয়েকজনকে গুরুতরভাবে আহত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় সাজ্জাদ হোসেনকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে শেরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে যাওয়ার সময় পথিমধ্যেই সাজ্জাদ হোসেন মারা যান। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছা. নাছিমা আক্তার বাদী হয়ে ২২ আগস্ট শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা মো. রায়হানকে প্রধান আসামি এবং আ. সালামকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকেই তারা দুজন পলাতক ছিলেন।
র্যাব আরও জানায়, সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলার পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তারে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে হত্যাকান্ডের নয় দিনের মধ্যে র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মো. আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ আভিযানিক দল ৩১ আগস্ট দুপুর পৌনে ২টার দিকে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের সময় শেরপুর সদরের চরখচ্চর এলাকা থেকে পলাতক প্রধান আসামি মো. রায়হান ও আ. সালামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তার দুই আসামিকে শেরপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাবের ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যা, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থানে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। র্যাব-১৪ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যার মত জঘন্য অপরাধ কর্মকাণ্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব ফোর্সেস অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে সমাজ তথা দেশকে বাঁচাতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।