জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুর সদরের রশিদপুর ইউনিয়নের তুলসীপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মো. লিটন হত্যা মামলার রায়ে সাতজন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। এ ছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড ও অতিরিক্ত দুই বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জামালপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এহসানুল হক এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন- মফিজ উদ্দিনের ছেলে মজিবর রহমান ভুট্টু (৪৫), তার ছেলে মিজান (২০), মো. সুরুজের ছেলে মো. সোহেল (২৫), ফজলুল হক ফটিকের ছেলে মো. সুমন (২৬), জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো. লাভলু (২০), আলফাজ উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৬) ও কুদ্দুছের ছেলে মো. মিজান (২১)। তাদের মধ্যে আসামি মজিবর রহমান ভুট্টু পলাতক রয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি জামালপুর সদরের রশিদপুর ইউনিয়নের রামদেববাড়ী গ্রামে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর ইউনিয়নের রামদেববাড়ী গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে ভিকটিম মো. লিটন ২০১৬ সালে স্থানীয় তুলসীপুর ডিগ্রি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র ছিল। লিটন রশিদপুর চৌরাস্তা মোড়ের কাছে তার চাচা মো. শফিকুল ইসলামের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতেন। ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে লিটন তার রামদেববাড়ী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তার চাচা শফিকুল ইসলামের বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে তিনি নিখোঁজ হন। পরের দিন ১৪ জানুয়ারি বিকেলে একই ইউনিয়নের গোপিনাথপুর এলাকায় পতিত জমি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয় নারায়ণপুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। ওই বছরের ১৫ জানুয়ারি ভিকটিম লিটনের বাবা আব্দুস সামাদ বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এলাকায় সমিতির টাকা লেন-দেন নিয়ে শত্রুতার জের ধরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা লিটনকে জবাই করে হত্যার পর আংশিক পুড়িয়ে লাশ পতিত জমিতে ফেলে দিয়েছিল বলে আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। মামলায় বাদীসহ ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ১৩ ফেব্রুয়ারি উপরোক্ত সাতজন আসামির বিরুদ্ধে মামলাটির রায় ঘোষণা করেন বিচারক এহসানুল হক।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী নির্মল কান্তি ভদ্র এবং মামলার বিবাদী পক্ষ সমর্থন করেন আইনজীবী আমান উল্লাহ আকাশ ও জামিল হাসান তাপস।