জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম : ‘হেলমেট পরিধান করি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’- এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুরোধে জামালপুর জেলা পুলিশের উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক ‘নো হেলমেট, নো রাইড’ কর্মসূচি চালু করা করা হয়েছে। ১৫ নভেম্বর বিকেলে জামালপুর-দেওয়ানগঞ্জ সড়কের মির্জা আজম চত্বরে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম।
পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান ১৫ নভেম্বর বিকেলে মির্জা আজম চত্বরে কয়েকজন হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেল আরোহীকে থামিয়ে তাদেরকে নিজের জীবন বাঁচাতে হেলমেট মাথায় পরে মোটরসাইকেল চালানোর অনুরোধ জানান। তাদের আইন মেনে চলার অনুরোধ করেন। সবাই হেলমেট পরে মোটরসাইকেল চালালে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমে আসবে বলেও তাদেরকে জানান। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেলে ‘নো হেলমেট, নো রাইড’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে হেলমেট ব্যবহারে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার।
পরে এই কর্মসূচির গুরুত্ব তুলে ধরে পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জমান বলেন, জীবন আমাদের একটাই। আর এই জীবন আমাদের নিজের জন্য না যতটা জরুরি, পরিবারের জন্য তার চেয়ে বেশি জরুরি। আমার কিছু হলে, আমার পরিবার যে কী অবস্থায় পড়বে, সেটি কিন্তু যে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিনিই বুঝেন। আমরা প্রতিবছরই দেখি সড়ক দুর্ঘটনায় বহুলোক মারা যাচ্ছে। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা কিন্তু সবচেয়ে বেশি। মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনাগুলো হয় সাধারণত মাথায় হেলমেট না থাকার কারণে। ছোট্ট একটি দুর্ঘটনায় আপনার মাথা যদি অরক্ষিত থাকে সে জন্য বড় কোন ক্ষতি বা মৃত্যু পর্যন্তও হয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আজকে আমাদের স্লোগান ‘নো হেলমেট, নো রাইড’ এর মানে হলো- আপনি হেলমেট না পরে আপনার মোটরসাইকেলটি নিয়ে বের হবেন না। এটার মূল উদ্দেশ্য হলো, অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই কয়েকটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আমরা দেখেছি আমাদের উজ্জ্বল কয়েকটি নক্ষত্র হারিয়ে গেছে। মেডিকেলের সরকারি কর্মকর্তা ডাক্তার থেকে শুরু করে মেডিকেলের স্টুডেন্ট থেকে শুরু করে নিরীহ মানুষরা কিন্তু একটু ছোট্ট দুর্ঘটনায় মাথায় হেলমেট ছিলনা বলেই মারা গেছে। প্রত্যেকটি দুর্ঘটনায় আমরা দেখেছি, তাদের মাথায় যদি হেলমেট থাকতো। প্রত্যেকটি জীবন কিন্তু সুরক্ষিত হতো।
পুলিশ সুপার বলেন, আমরা এই সচেতনতামূলক কর্মসূচিটি চালু করেছি। আশা করি মাসব্যাপী তথা বছরব্যাপী এই সচেতনতামূলক কর্মসূচিটা চলবে। নো হেলমেট, নো রাইড- এটা আমরা বলেই যাবো। যতদিন পর্যন্ত না তারা আইনকে সম্মান করতে না শিখবে। আমরা কিন্তু পিছপা হবো না। আমরা কিন্তু বলেই যাবো। আজকে কিছু স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে এই কর্মসূচি শুভ উদ্বোধন করলাম।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকে প্রত্যেককে বোঝাতে হবে যে, একটি হেলমেটের কারণে জীবনটাই যদি হারিয়ে যায়, তোমার পরিবারই কিন্তু সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আশা করি আমরা যদি বোঝাতে পারি জামালপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কোনো মৃত্যু হবে না। যদি আমরা হেলমেট পরিধান করি। দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু মৃত্যুর হার অনেক কমে আসবে।
এ সময় সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জাহিদ আনোয়ার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল আহমেদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহরাব হোসেন, জামালপুর সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহব্বত কবীর, ডিবির ওসি মো. কাজী শাহ নেওয়াজ, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আব্দুর রহিম ভূইয়াসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।