দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য ডব্লিউএইচও-এর পরবর্তী আঞ্চলিক পরিচালক মনোনীত হওয়ায় ড. সায়মা ওয়াজেদকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ৭ নভেম্বর বলেছেন, এটি বেইজিং এবং ঢাকার মধ্যে স্বাস্থ্য সহযোগিতা বাড়াবে।
ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘তার (সায়মা) মনোনয়ন স্বাস্থ্য খাতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর নতুন চ্যানেল ও সুযোগও খুলে দিয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জন্য ডব্লিউএইচও-এর পরবর্তী আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে সায়মা ওয়াজেদের মনোনয়ন সমগ্র মানবতার স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশের আরেকটি অবদান।
চীনের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু বিরোধী জরুরি সরবরাহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এ মন্তব্য করেন।
বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ এ অঞ্চলের ১১টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
ডব্লিউএইচও নির্বাহী বোর্ডের ১৫৪তম অধিবেশনে তার নাম এখন নিয়োগের জন্য জমা দেওয়া হবে। এ অধিবেশন ২০২৪ সালের ২২-২৭ জানুয়ারী সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত হবে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার কৌশলগত অংশীদারিত্ব আরও গভীরতর হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং এর বাইরেও চীন বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের নেতৃত্বের যৌথ নির্দেশনায় বাংলাদেশ ও চীন অবশ্যই ডেঙ্গু মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভের জন্য একসঙ্গে প্রচেষ্টা চালাবে এবং পাশাপাশি লড়াই করবে, যা দুই দেশের মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করবে।
তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবছরের আগস্টের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ব্যক্তিগতভাবে ঘোষণা করেছিলেন যে, চীন বাংলাদেশকে ডেঙ্গু প্রতিরোধী ২৫ মিলিয়ন আরএমবি সহায়তা দেবে।
তারপর থেকে, দুই সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছে এবং চীন থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধী জরুরি সরবরাহ দ্রুত আনা এবং সময়মতো ব্যবহার নিশ্চিত করতে কার্যকরভাবে সহযোগিতা করেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আজকের হস্তান্তর অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র দুই নেতার মধ্যে উপনীত ঐকমত্যের বাস্তবায়নই নয়, বরং এটি আরেকটি বহি:প্রকাশ যে, চীন ও বাংলাদেশ প্রকৃত বন্ধু, যারা সুখ ও দু:খে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং সবসময় একে অপরকে সাহায্য করে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, গত তিন বছরে চীন ও বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় হাত মিলিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই বছরের শুরুতে, আমরা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চীন-এইড প্রকল্পের বাস্তবায়ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, অত্যাধুনিক ক্লিনিকাল প্রযুক্তি ও এ বিষয়ে জানার জন্য চীনের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের একটি দল বাংলাদেশে এসেছে এবং জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত চার রোগীর সফলভাবে অস্ত্রোপচার করেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘ভবিষ্যতে, চীন বাংলাদেশের সাথে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি অব্যাহত রাখবে এবং যাতে দুই দেশের জনগণের জন্য আরো বাস্তব সুবিধা বয়ে আনবে।”
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং ডিজিএইচএস-এর মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।