বেড়েই চলছে ইজিবাইক, প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনার কবলে পথচারীরা

ইসলামপুরে ইজিবাইকের যানজট। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

লিয়াকত হোসাইন লায়ন
ইসলামপুর প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুরে দিন দিন বেড়েই চলছে ইজিবাইক। প্রতিনিয়ত যানজট বৃদ্ধির পাশাপাশি ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ করার ফলে পাল্লা দিয়ে ঘটছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট।

উপজেলার ইসলামপুর-জামালপুর সড়কসহ আনাচে কানাচে অসংখ্য ইজিবাইক চলাচলের ফলে প্রতিনিয়তই যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে ও চালকদের বেপরোয়া চালনার ফলে বড় যানবাহনের চালকরা বিরক্ত বোধ করছে। ইজিবাইক চালকদের বেপরোয়া চালনার কারণে দুর্ঘটনায় বিগতদিনে পথচারীর মৃত্যুও হয়েছে।

এ উপজেলায় প্রায় ৪৫টি পয়েন্টে প্রায় ২ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে। এসব ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জ করতে অধিক বিদ্যুৎ খরচ হয়। ফলে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ছে। অধিকাংশ চোরাই লাইনের মাধ্যমে ব্যাটারি চার্জ করায় যেমন বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে ঠিক তেমন রাজস্ব হারাচ্ছে সরকারের পিডিবি ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি।

সবচেয়ে বড় কথা হলো-যেখানে সরকার বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিতে বদ্ধ পরিকর। সেখানে চোরাই লাইনের মাধ্যমে এসব ইজি বাইকের ব্যাটারি চার্জ করতেই অনেকেই ব্যস্ত। এতে করে বিদ্যুতের প্রচুর ঘাটতিসহ লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। এসব ইজি বাইকের ক্রয়মূল্য কম থাকায় সহজেই কেনা যায়। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এগুলো চালাচ্ছে রিকশা-ভ্যান চালকেরা। ইজিবাইকের দ্বারা সৃষ্ট যানজটের কারণে ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় ৩০ মিনিট লাগছে ।

ইসলামপুরে ইজিবাইকের যানজট। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

ট্রাকচালক সিদ্দিক মিয়া জানান, ইজিবাইকের কারণে বড় বাজার পার হতে অনেক সময় লেগে যায়। সরকারের কোন প্রকার অনুমোদন/বাধ্যবাধকতা না থাকার ফলে বালক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত এখন ঝুঁকে পড়েছে ইজিবাইকের দিকে।

ইজিবাইক চালক দুলাল মিয়া জানান, আগে এই এলাকায় ইজিবাইক কম ছিল। রাস্তায় তেমন যানজট ছিলনা। ইজিবাইকের কারণে রিকশা-ভ্যান চালকেরা যেখানে আগে ৫০০/৬০০ টাকা প্রতিদিন রোজগার হতো সেখানে এখন ২০০/২৫০ টাকা আয় করতে অনেক হিমশিম খেতে হয়। এখন প্রতিটি মোড়ে মোড়ে যানজটে আমাদের রোজগার কমে গেছে।

পথচারী কলেজ পড়ুয়া নুসরাত জাহান জানান, ইজিবাইকের কারণে কলেজে যেতেও অনেক বিলম্ব হয়। আমাদের ছোট্ট এ শহরে আয়তনের তুলনায় অধিক ইজিবাইক হওয়ায় প্রতিনিয়ত পথচলতেও সমস্যা হয়। সচেতন মহল ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করে যানজট নিরসন ও বিদ্যুৎ অপচয় রোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিরাজুল ইসলাম বলেন, দিন দিন বেড়েই চলছে ইজিবাইক। কিন্তু আমাদের শহরের আয়তন তো দিন দিন বাড়ছে না। শহরের বাইরে কয়েকটি পয়েন্টে স্ট্যান্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে এতে করে কিছুটা হলেও যানজট মুক্ত হওয়া সহ পথচারীদের চলাচলে সুবিধা হবে। ইজিবাইক ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পাশাপাশি রাতের বেলায় অটো, সিএনজিগুলোতে অতিরিক্ত চার্জার লাইট লাগানোর ফলে দৃষ্টি দিতে হিমশিম শিকার হওয়ায়, হ্যালোজেন লাইট নিষ্ক্রিয় করতে অভিযান চলবে। অভিযানে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।