নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলা হাসপাতাল ও ২৫০ শয্যার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ৩০ মার্চ থেকে সরকার নির্ধারিত ফিয়ের বিনিময়ে রোগীদের বৈকালিক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ভারচুয়াল উদ্বোধনী ঘোষণা অনুষ্ঠান শেষে এই চিকিৎসাসেবা শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়। এছাড়া স্থানীয়ভাবে প্রচারণা না থাকায় প্রথম দিনে মাত্র তিনজন রোগী এই সেবা গ্রহণ করেছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ভারচুয়াল উদ্বোধনী ঘোষণা অনুষ্ঠান শেষে জামালপুরের জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায়, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. এস এম ইকবাল হোসেন চৌধুরী, জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-স্বাচিপ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. সাজদা-ই-জান্নাত তনু হাসপাতালের বহির্বিভাগের তিনটি কক্ষে চালু করা বৈকালিক রোগী সেবা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন।
হাসপাতালের বহির্বিভাগের একটি কক্ষে মো. ইব্রাহীম নামের একজন রোগীকে পরামর্শ দেওয়ার পর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রায়হান রতাপ খান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, এই ধরনের সেবা চালিয়ে যেতে পারলে ডাক্তার ও রোগী সবার জন্যই ভালো হবে। রোগীর জন্য সাশ্রয়ী হবে। জনগণ অনেক উপকৃত হবে। ডাক্তাররা যেখানেই যে চেম্বারেই বসে রোগী দেখেন না কেন, ডাক্তারদের সার্ভিসের কোন ভিন্নতা হয় না। সরকারি হাসপাতালে এই ধরনের সেবা চালু হওয়ায় হাসপাতালটাও অ্যাকটিভ থাকতেছে। আজকে এখানে প্রথম আমি একজন জ্বরের রোগী দেখলাম। তিনি সকালে সব টেস্ট করেও হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে পারেননি। এখন তাকে ব্যবস্থাপত্রসহ সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে দিলাম।
বৈকালিক সেবা নিতে আসা জ্বরের রোগী মো. ইব্রাহীম (৪৪) বললেন, সকালবেলা এই হাসপাতালে এক্স-রেসহ সব টেস্ট করছি। কিন্তু রিপোর্ট নিতে নিতে বেলা চলে গেছে। ডাক্তার দেখাতে পারি নাই। পেপারে, টিভিতে শুনছিলাম যে আজকে থেকে বিকেলেও ডাক্তার দেখানো যাবে। তাই আসছিলাম। মাত্র ৩০০ টাকায় ডাক্তার দেখাইলাম। ভালোই হইছে।
এছাড়াও এই হাসপাতালের অন্য দুটি কক্ষে প্রথম দিনের বৈকালিক সেবায় রোগী দেখেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) ডা. ফাখরিয়া আলম ও শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ডা. মো. সাইফুল্লাহ কবীর। তারা একজন করে রোগী দেখেছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি ব্যতীত এই হাসপাতালে সপ্তাহে ছয়দিন রোগীদের দেওয়া হবে বৈকালিক সেবা। আপাতত সার্জারি, মেডিসিন ও গাইনি এই তিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সরকার নির্ধারিত ফি নিয়ে রোগীদের সেবা দিবেন। রোগীদের জন্য এক্স-রে ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাব খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হবে। জরুরি প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে তারও ব্যবস্থা করা হবে। উদ্বোধনী দিনের কারণে তিনজন ডাক্তার তিনজন রোগী দেখেছেন। জানাজানি হলে হয়তো শনিবার (১ এপ্রিল) থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়বে।