যমুনা সার কারখানায় ৪৮৬ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

যমুনা সার কারখানায় ৪৮৬ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি:বাংলারচিঠিডটকম

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম : জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দিতে অবস্থিত দেশের সর্ববৃহৎ ও একমাত্র দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানার (জেএফসিএল) ৪৮৬ জন শ্রমিককে ছাটাইয়ের প্রতিবাদে দ্বিতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১০ সেপ্টেম্বর সকালে কারখানা এলাকার প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে তারা প্রধান ফটকে অবস্থান ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা চাকরি ফেরত পেতে দুইদিনের আল্টিমেটাম দেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরআগে ৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

জেএফসিএল সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রাধীন কেপিআই-১ মানের যমুনা সারকারখানায় ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৈনিক হাজিরাভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করে। দরপত্র আহ্বান করে নির্বাচিত ঠিকাদারের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য এসব শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপির প্রতিনিধি সাখাওয়াত আলম মুকুলের মালিকানাধীন মেসার্স জান্নাত এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ৪৮৬ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলো। তাদের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যাওয়ার ১ সেপ্টেম্বর থেকে সকল শ্রমিককে কারখানায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা দেয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে নতুন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রাখতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আদালতে মামলা দায়ের করে।

এর প্রতিবাদে ১০ সেপ্টেম্বর সকালে শ্রমিকরা কারখানা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রধান ফটকে সমাবেশ করে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দাবি করেন, মামলায় শ্রমিক নিয়োগে বাধা না থাকলেও ঠিকাদারের যোগসাজশে কারখানা কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বান করছে না। বরং বিধিবহির্ভূতভাবে কর্তৃপক্ষ নিজেদের পছন্দমতো লোকজন নিয়োগের পায়তারা করছে। অস্থায়ী ভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ ও ছাটাইকৃত শ্রমিকদের পুনরায় কাজের সুযোগ দিতে তারা দুইদিনের আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান।

সমাবেশে শ্রমিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল হোক, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ।

ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক জানান, শ্রমিকদের দাবি যৌক্তিক। বিষয়টি দ্রুত সমাধান না হলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।

এব্যাপারে কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে জানান, চুক্তিভিত্তিক ৪৮৬ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৯৩ জনের নিয়োগ বিধি মোতাবেক আগেই বাতিল হয়েছে। বাকি ২৯৩ জনের মেয়াদকাল গত ৩১ আগস্ট শেষ হয়। নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিলো, কিন্তু কর্মরত ঠিকাদারের মামলার কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় নতুন শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ আছে।

সরিষাবাড়ী থানার ওসি মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান, শান্তিপূর্ণভাবে শ্রমিকরা কর্মসূচি পালন করে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

sarkar furniture Ad
Green House Ad