প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতিকর উদ্ভিদ পার্থেনিয়াম নির্মূলে অভিযান

সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম : ‘স্বেচ্ছাশ্রমে গড়ি দেশ, সুস্থ সুন্দর বাংলাদেশ’—এ স্লোগানে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলায় প্রকৃতি ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিকর উদ্ভিদ পার্থেনিয়াম নির্মূলে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
২৬ আগস্ট সকালে উপজেলার আওনা ইউনিয়নের জগন্নাথগঞ্জ ঘাট সংলগ্ন এডভোকেট মতিয়র রহমান রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় একদল ছাত্র নিয়ে প্রকৃতিপ্রেমী অধ্যাপক হাসমত আলী ইচ্ছেশ্রমের ব্যানারে এ অভিযান পরিচালনা করেন।
হাসমত আলী জানান, পার্থেনিয়াম একটি ক্ষতিকর আগ্রাসী উদ্ভিদ। এটা নরম কাণ্ড বিশিষ্ট গুল্ম জাতীয় আগাছা। একে গাজর ঘাসও বলা হয়। দেখতে অনেকটা গাজর পাতা বা চন্দ্রমল্লিকা ফুল গাছের পাতার মতো। এতে ছোট ছোট সাদা ফুল ফোঁটে। বীজ খুবই ক্ষুদ্র ও হালকা, তাই বাতাসের মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে এবং দ্রুত বংশ বৃদ্ধি করে।
তিনি আরও বলেন, পার্থেনিয়ামের আদি নিবাস উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং উত্তর পূর্ব মেক্সিকো। এর বৈজ্ঞানিক নাম পার্থেনিয়াম হিস্টারোফোরাস। এটি সাধারণত ২ থেকে ৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট হয়ে থাকে।
অধ্যাপক হাসমত আলী আরো জানান, পার্থেনিয়াম ৪ মাসে ৩ বার ফুল দিয়ে একটি গাছ হতে ৪-১৫ হাজার বীজ উৎপন্ন করে। এই উদ্ভিদের ফুলের রেনু বাতাসের মাধ্যমে মানুষের সংস্পর্শে এলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, জ্বর, এলার্জি, চর্মরোগ, ব্রংকাইটিসসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। গবাদিপশু এ ঘাস খেলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। ফসলের ক্ষেতে এ উদ্ভিদ জন্মালে ফসলের উৎপাদন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তাই আমরা উদ্যোগ নিয়েছি স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ ক্ষতিকর উদ্ভিদটি নির্মূল করতে হবে।
ইচ্ছাশ্রম সংগঠনের সদস্য আব্দুস সবুর, সাদ, আলহাজ মিয়া, সবুজ রানাসহ অনেকেই বলেন, এ ক্ষতিকর উদ্ভিদ সম্পর্কে আমাদের ধারণা আগে ছিলনা। হাসমত স্যারের কাছ থেকে জানতে পারলাম এটা ক্ষতিকর একটা উদ্ভিদ। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে এটি নির্মূল করতে আমরা এসেছি।
সরিষাবাড়ী কৃষি অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এটি একটি ক্ষতিকর উদ্ভিদ। এ সম্পর্কে সকলের তেমন জানা নেই। তাদের এ কাজকে আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সাধুবাদ জানাই।