মোস্তফা মনজু, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম: রেলওয়ের সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে ঢাকায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একছাত্রের অবস্থান কর্মসূচি পালনের রেশ ধরে জামালপুর রেলস্টেশনেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যায় ও কলেজের চার তরুণ ছাত্র অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। ১৮ জুলাই তারা জামালপুর রেলস্টেশনের প্লাটফরমে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন। তাদের এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়া চারজন তরুণের মধ্যে বকশীগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা মেহেদী হাসান রুবেল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান ও পুলিশ তত্ত্ব বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র, জামালপুর শহরের শেখেরভিটা থেকে আসা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র রুকুনুজ্জামান সীমান্ত, শেরপুর জেলা সদরের নাগপাড়া থেকে আসা হৃদয় বোস জামালপুরের সরকারি ইসলামপুর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং জামালপুর শহরের আমলাপাড়া থেকে আসা আব্দুল্লাহ ভূইয়া হৃদয় ঢাকার খিলগাঁও মডেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র।
এই চার তরুণ ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ১৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে বিকেল পর্যন্ত জামালপুর রেলস্টেশনের এক নম্বর প্লাটফরমে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা ঢাকায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচির সূচনাকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ছয় দফা দাবি তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন এবং ভুক্তভোগী ট্রেনযাত্রীদের সরব হওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় ছয়দফা দাবি পূরণ করে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা। এ সময় বিপুল সংখ্যক ভুক্তভোগী ট্রেনযাত্রী তাদের এ আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান।
আন্দোনলকারী এই চার ছাত্রের তুলে ধরা ছয় দফা দাবিগুলো হলো- টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা ও হয়রানির ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া, যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করা, অনলাইনে টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করা ও অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা, যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া, ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক-তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি ও শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বাড়ানো এবং ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
এ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান ও পুলিশ তত্ত্ব বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান রুবেল বাংলারচিঠিডটকমকে বলেন, ঢাকায় কমলাপুর রেলস্টেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি ভাইয়ের অবস্থান কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে আজকে আমরা জামালপুরেও এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা এই চারজনছাত্রসহ অসংখ্য ট্রেনযাত্রীরা এখানে টিকিট কালোবাজারিসহ নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হই। আমরা টিকিট কালোবাজারি বন্ধসহ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অবসান চাই। ঢাকায় রনি ভাইয়ের দেওয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তনে ছয় দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জামালপুরেও অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। ভুক্তভোগী যাত্রীদের কাছ থেকেও বেশ সাড়া পেয়েছি আমরা। ১৯ জুলাই সকাল ১০টার দিকে ছয়দফা দাবি নিয়ে পুনরায় রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান নিবো আমরা।