শেষ ম্যাচেও জয়ে চোখ বাংলাদেশের

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ ইতোমধ্যেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় আগামীকাল গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টিম ম্যানেজমেন্টের সাইড বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষার পরিকল্পনা থাকলেও স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের আশা ছাড়তে রাজি নয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। অর্থাৎ আগামীকালের ম্যাচে জয় দিয়েই ক্যারিবিয় সফর শেষ করাই লক্ষ্য টাইগারদের।

বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়া ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার হবে টি-স্পোর্টস চ্যানেলে।

প্রথম দুই ম্যাচে দাপুটে জয়ে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে যাওয়ায়, শেষ ওয়ানডে রুপ নিয়েছে নিয়মরক্ষায়।

এ সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ (প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত) ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ।

তবে নিজেদের পছন্দের ওয়ানডে ফরম্যাটে ঘুড়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।

প্রথম দুই ওয়ানডের ভেন্যু ছিলো গায়ানা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মতো ধীরগতির উইকেট ছিলো, যা বাংলাদেশের জন্য বড় সুবিধা ছিলো। বৃষ্টি বিঘিœত প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে জিতে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা।

দুই ওয়ানডেতে জয়েই বড় ভূমিকা রাখেন অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও এই সিরিজে অভিষেক হওয়া বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।

সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ায় শেষ ম্যাচে দু’টি কারণে একাদশে পরিবর্তন আনতে পারে বাংলাদেশ। প্রথমত,সিরিজটি আইসিসি সুপার লিগের অংশ না হওয়ায় মূল্যবান পয়েন্ট হারানোর কোন শংকা নেই। দ্বিতীয়ত ভারতে অনুষ্ঠেয় ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ^কাপের কথা মাথায় রেখে দল গঠনে বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষা করা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচের পর অধিনায়ক তামিম বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষা করার জন্য এটাই সেরা সময়।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিরিজটি আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের অংশ নয়। তাই পয়েন্ট নিয়ে কোন চিন্তা নেই। তাই আপনি যখন সিরিজ জিতবেন, তখন অবশ্যই কিছু খেলোয়াড়কে ম্যাচ খেলার সুযোগ দিতে হবে। এমনকি বেঞ্চের খেলোয়াড়দের ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমি নিজেও একটি ম্যাচ মিস করতে রাজি।’

বাংলাদেশের তিন খেলোয়াড় এই ওয়ানডে সিরিজে খেলেননি। এরা হলেন- এবাদত হোসেন, এনামুল হক বিজয় ও তাইজুল ইসলাম। তাই মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ ও টপ অর্ডার ব্যাটারদের মধ্যে কাউকে বিশ্রাম দিতে পারে বাংলাদেশ।

‘আমাদের বেঞ্চের শক্তি পরীক্ষা করতে হবে। হ্যাঁ, অবশ্যই ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জিততে চাই আমরা। তবে বেঞ্চের খেলোয়াড়দের খেলার সুযোগ দেয়াটাও গুরুত্বপুর্ন। কারণ আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য আমাদের একটি ভাল কম্বিনেশন দরকার।’

বুধবারের দ্বিতীয় ওয়ানডের জয় শুধুমাত্র বাংলাদেশের সিরিজই নিশ্চিত করেনি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ১০ ম্যাচ জয়ের নজির গড়েছে টাইগাররা। এমনকি শ্রীলংকা, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার পর টানা পঞ্চম ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা চতুর্থ সিরিজজয়।

তাই তৃতীয় ও শেষ ম্যাচের জয়, টানা ১১তম ম্যাচে জয়ে উত্তীর্ণ করবে। সেই সাথে সিরিজে হোয়াইটওয়াশও। ধীর গতির উইকেটে বাংলাদেশের স্পিনারদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা। তাই একাদশে বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তন আনাটা অসম্ভব কিছু না।

২০১৮ সাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অপরাজিত বাংলাদেশ। ঐ বছর যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো বাংলাদেশ। এরপর ২০১৯ ও ২০২১ সালে দু’টি সিরিজ যথাক্রমে, ২-১ ও ৩-০ ব্যবধানে জিতে টাইগার দল। এসময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেন্যু, বহুজাতিক টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপ ও ত্রিদেশীয় সিরিজেও জয় পায় বাংলাদেশ।

সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৩টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। জিতেছে ২০টিতে, হেরেছে ২১টিতে। ২টি পরিত্যক্ত হয়। যদি সিরিজের শেষ ওয়ানডে জিততে পারে বাংলাদেশ, তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়-হারের ব্যবধান সমান হয়ে যাবে টাইগারদের।

ওয়ানডেতে ৩৯৬টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে জয় ১৪২টি, হার ২৪৭টি এবং ৭টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। কিন্তু দেরিতে হলেও, বাংলাদেশের জয়ের অনুপাত হারের চেয়ে বেশি। বিশেষভাবে ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকে বাংলাদেশ ১৬টি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। হার মাত্র ৪টি সিরিজে। যা এই ফরম্যাটে তাদের শক্তির বড় প্রমান।

বাংলাদেশ দল : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নুরুল হাসান সোহান, আনামুল হক, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম ও এবাদত হোসেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), শামারাহ ব্রুকস, ব্রান্ডন কিং, রোভম্যান পাওয়েল, কেসি কার্টি, কাইল মায়ার্র্স, গুদাকেশ মোতি, কিমো পল, শাই হোপ, আকিল হোসেন, আলজারি জোসেফ, এন্ডারসন ফিলিপ ও জেইডেন সিলেস।