ঢাকা ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মাদারগঞ্জে চার শতাধিক শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ মাদারগঞ্জে মোজাম্মেল মমতাজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা জয় দিয়ে নারী অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের শামি-বুমরাহকে নিয়ে ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ইরানে দুই বিচারককে গুলি করে হত্যা লস এঞ্জেলেস দাবানলের শিকারদের উদ্ধারে ব্যাপক অনুসন্ধানে কুকুরের অমূল্য প্রমাণিত হয়েছে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী : জামালপুর জেলা যুবদলের আলোচনা সভা, শীতবস্ত্র বিতরণ জিল বাংলা সুগার মিলস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ইসলামপুরে মরহুম ডাক্তার রিয়াজুল নূর ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা

টাকা দিলে বিদ্যুতের খুঁটি মিলে

শফিউল আলম লাভলু, নকলা প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরের নকলা উপজেলায় মুজিব শতবর্ষে ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছানের লক্ষ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ চলছে। কিন্তু টাকা ছাড়া গ্রাহকরা পাচ্ছেনা বিদ্যুতের খুঁটি। বিনামূল্যের সরকারি বিদ্যুতের খুঁটি গ্রাহকের কাছ থেকে খুঁটি প্রতি ২/৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্টবোর্ড (বিপিডিবি)’র আবাসিক প্রকৌশলী’র নকলা কার্যালয়ের মিটার রিডার মো. হান্নান মিয়া ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

বিদ্যুতের গ্রাহক ভ্যানচালক বাবুল মিয়া জানান, নকলা পৌরসভাধীন চরকৈয়া দক্ষিণপাড়া আহলে হাদিস জামে মসজিদের পাশে বাড়িতে আমরা চার পরিবার বসবাস করি। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিসে একাধিকবার ধরনা দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করতে পারেনি। পরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা শাহাদাৎ হোসেন ও মিটার রিডার হান্নানকে স্থানীয় একজনের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা দেই।

শফিউল আলম বলেন, দূর থেকে বাঁশের খুটির মাধ্যমে লাইন টেনে এতদিন চলছিলাম। ঠিকমতন ভোল্টেজ না পাওয়ার কারণে কয়েকবার সেচের মটর পুড়ে গেছে। বিদ্যুৎ অফিসে মৌখিক ও লিখিত ভাবে অনেকবার আবেদন করেও কোন খুঁটি পাইনি। পরে বাধ্য হয়ে মিটার রিডার হান্নান ১০ হাজার টাকা নেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোক শাহাদাৎকে দিয়ে খুঁটির ব্যবস্থা করিয়ে দিবে বলে।

সেচ পাম্পের মালিক শরিফ ও বারেক বলেন, বাশেঁর খুঁটি দিয়ে দূর থেকে লাইন টানার কারনে ভোল্টেজ একদম কম থাকে। এ কারণে সেচের মটর বছরে ১/২বার পুড়ে যায়। টাকা ছাড়া বিদ্যুতের খুটি দিবে না বলে জানায় মিটার রিডার হান্নান মিয়া। পরে হান্নান মিয়া জানায় আমাকে টাকা দিলে ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের শাহাদৎ দিয়ে বিদ্যুতের খুটির ব্যবস্থা করে দিব। পরে আমরা বাধ্য হয়ে টাকা দেই। এভাবে টাকা দিলে তারা খুঁটি বসিয়ে দেয়। একইভাবে মিটার রিডার হান্নান ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শাহাদাৎ হোসেন কৌশলে সালাম, মানিক, লতিফ, রিয়াজ, রুবন, নান্ডু, গিয়াস উদ্দিনসহ আরও অনেকেই কাছ থেকে খুটির জন্য টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মুজিব শতবর্ষে নকলায় ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ, পরিবর্ধন ও স¤প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ শুরু হয়। খুঁটি স্থাপন করার কাজ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি মেইন লাইনসহ সাইড লাইনে নতুন সিমেন্টের তৈরী বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করবে। এদিকে দরপত্রের মাধ্যমে খুঁটি বসানোর কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে খুঁটি প্রতি ২/৩ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগী বিদ্যুতের গ্রাহকদের।

এ ব্যাপারে মিটার রিডার হান্নান মিয়া ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শাহাদাৎ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. ছোরহাব আলী জানান, সরকারী খুঁটি বসানোর জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিধান নেই। এ ব্যাপারে যদি লিখিত অভিযোগ পাই এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন লোক ও বিদ্যুৎ বিভাগের কেউ টাকা নিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিদ্যুতের খুঁটির জন্য টাকা নিচ্ছে এমন মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদারগঞ্জে চার শতাধিক শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

টাকা দিলে বিদ্যুতের খুঁটি মিলে

আপডেট সময় ০৯:১৩:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মে ২০২২

শফিউল আলম লাভলু, নকলা প্রতিনিধি, বাংলারচিঠিডটকম: শেরপুরের নকলা উপজেলায় মুজিব শতবর্ষে ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছানের লক্ষ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ চলছে। কিন্তু টাকা ছাড়া গ্রাহকরা পাচ্ছেনা বিদ্যুতের খুঁটি। বিনামূল্যের সরকারি বিদ্যুতের খুঁটি গ্রাহকের কাছ থেকে খুঁটি প্রতি ২/৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্টবোর্ড (বিপিডিবি)’র আবাসিক প্রকৌশলী’র নকলা কার্যালয়ের মিটার রিডার মো. হান্নান মিয়া ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

বিদ্যুতের গ্রাহক ভ্যানচালক বাবুল মিয়া জানান, নকলা পৌরসভাধীন চরকৈয়া দক্ষিণপাড়া আহলে হাদিস জামে মসজিদের পাশে বাড়িতে আমরা চার পরিবার বসবাস করি। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিসে একাধিকবার ধরনা দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করতে পারেনি। পরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা শাহাদাৎ হোসেন ও মিটার রিডার হান্নানকে স্থানীয় একজনের মাধ্যমে ২ হাজার টাকা দেই।

শফিউল আলম বলেন, দূর থেকে বাঁশের খুটির মাধ্যমে লাইন টেনে এতদিন চলছিলাম। ঠিকমতন ভোল্টেজ না পাওয়ার কারণে কয়েকবার সেচের মটর পুড়ে গেছে। বিদ্যুৎ অফিসে মৌখিক ও লিখিত ভাবে অনেকবার আবেদন করেও কোন খুঁটি পাইনি। পরে বাধ্য হয়ে মিটার রিডার হান্নান ১০ হাজার টাকা নেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোক শাহাদাৎকে দিয়ে খুঁটির ব্যবস্থা করিয়ে দিবে বলে।

সেচ পাম্পের মালিক শরিফ ও বারেক বলেন, বাশেঁর খুঁটি দিয়ে দূর থেকে লাইন টানার কারনে ভোল্টেজ একদম কম থাকে। এ কারণে সেচের মটর বছরে ১/২বার পুড়ে যায়। টাকা ছাড়া বিদ্যুতের খুটি দিবে না বলে জানায় মিটার রিডার হান্নান মিয়া। পরে হান্নান মিয়া জানায় আমাকে টাকা দিলে ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের শাহাদৎ দিয়ে বিদ্যুতের খুটির ব্যবস্থা করে দিব। পরে আমরা বাধ্য হয়ে টাকা দেই। এভাবে টাকা দিলে তারা খুঁটি বসিয়ে দেয়। একইভাবে মিটার রিডার হান্নান ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শাহাদাৎ হোসেন কৌশলে সালাম, মানিক, লতিফ, রিয়াজ, রুবন, নান্ডু, গিয়াস উদ্দিনসহ আরও অনেকেই কাছ থেকে খুটির জন্য টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মুজিব শতবর্ষে নকলায় ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ, পরিবর্ধন ও স¤প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ শুরু হয়। খুঁটি স্থাপন করার কাজ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি মেইন লাইনসহ সাইড লাইনে নতুন সিমেন্টের তৈরী বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করবে। এদিকে দরপত্রের মাধ্যমে খুঁটি বসানোর কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের কাছ থেকে খুঁটি প্রতি ২/৩ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগী বিদ্যুতের গ্রাহকদের।

এ ব্যাপারে মিটার রিডার হান্নান মিয়া ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের শাহাদাৎ হোসেনের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মো. ছোরহাব আলী জানান, সরকারী খুঁটি বসানোর জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিধান নেই। এ ব্যাপারে যদি লিখিত অভিযোগ পাই এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন লোক ও বিদ্যুৎ বিভাগের কেউ টাকা নিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিদ্যুতের খুঁটির জন্য টাকা নিচ্ছে এমন মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।