ঢাকা ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমানকেই এই মুহূর্তে দরকার : বিএনপিনেতা শামীম আহমেদ জামালপুরের বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ আক্তারুজ্জামান আউয়ালের দাফন সম্পন্ন শেরপুরে বিএনপির মিছিল সমাবেশ মাঠ পর্যায়ে শিক্ষা ছাড়া প্রকৃতিকে বোঝা সম্ভব নয় : মিজানুর রহমান ভূঁইয়া খালেদা জিয়াকে নিয়ে কটূক্তি : আওয়ামী লীগনেতা জলিলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ নতুন করে বাংলাদেশকে কিভাবে সাজাব সেইটা পরিকল্পনা করছি : শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে রমজান শুরুর আগের সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে : প্রধান উপদেষ্টা মাদারগঞ্জে ক্লাব ফুটবল টুর্নামেন্টে উত্তর চরবওলা স্পোর্টিং ক্লাব এ দল চ্যাম্পিয়ন দেওয়ানগঞ্জে ইসলামী সংস্কৃতি জোটের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত বকশীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বাধায় পণ্ড হওয়া ফুটবল খেলা সাত বছর অনুষ্ঠিত

বড়ই আবাদে দুই লাভ দেখছে শেরপুরের বনাঞ্চলের চাষীরা

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম : বড়ই আবাদে দুই লাভ দেখছে শেরপুরের বনাঞ্চল ঘেরা শ্রীবরদীর চাষিরা। বড়ই চাষিরা জানায়, এই ফল আবাদের জন্য গারো পাহাড়ের মাটি উপযুক্ত হওয়ায় স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদন যেমন হচ্ছে অন্যদিকে এই গাছ কাঁটাযুক্ত হওয়ায় বন্যহাতির দল ভয়ে লোকালয়ে হানা দিতে সাহস হারাচ্ছে। ফলে বড়ইয়ের বেশী উৎপাদনে যেমন তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন সেই সাথে হাতির আক্রমণ কিছুটা ঠেকাতে পেরে রাতে নিজ ঘরে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাতে পারছেন।

জানা যায়, অন্য ফসল চাষ করে কয়েক দফা বন্যহাতির আক্রমণ লোকসান গুনে এবার মিশ্র জাতের বড়ই আবাদে সফলতা পেয়েছেন উপজেলার কর্ণঝোড়া বাবেলাকোনা গ্রামসহ আশাপাশের অন্যান্য গ্রামের কৃষকরা। চলতি মৌসুমে ওইসব এলাকায় আপেল কুলসহ কাশ্মিরী ও বলসুন্দরী জাতের বড়ই চাষ হচ্ছে।

শামীম মোল্লা নামে এক সফল চাষী জানান, বাবেলাকোনায় তার চার বিঘা জমিতে কাশ্মীরি, আপেল ও বল সুন্দরী জাতের বড়ই চারা রোপণ করেন। প্রায় ১০ মাস আগে ওইসব চারা তিনি বগুড়া জেলা থেকে সংগ্রহ করে আনেন। বর্তমানে সেসব গাছে ব্যাপক পরিমাণ বড়ই ধরে গাছ ঝুঁকে পড়েছে। এরমধ্যে পাকা বড়ই বিকি-কিনিও শুরু হয়েছে।

শামীম মোল্লা বলেন, বাগানের ৬শ’ গাছের মধ্যে এখন ৪শ’ গাছে ফলন হচ্ছে। সার ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা।

তিনি আশা করছেন এ বছরই তার খরচের সব টাকা উঠিয়ে লাভের মুখ দেখবেন। আর পরবর্তী বছর থেকে লাভের পরিমাণ আরও বাড়বে।

স্থানীয় পাইকার আফজাল মিয়া বলেন, পাহাড়ে উৎপাদিত বড়ই মান ভেদে প্রতিমণ ১৬শ থেকে দুই হাজার টাকা মণ দরে তারা কিনে থাকেন।

জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বনাঞ্চলে ঘুরতে আসা পর্যটকরা জানান, পাহাড়ের বাগানে থোকা থোকা বড়ই ঝুলে থাকার দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়।

পর্যটক রাইসুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রেহেনা পারভীন বলেন, তারা এই সু-স্বাদু বড়ই খেয়েছেন। সেই সাথে আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

রেজাউল করিম নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, শামীমের বাগানে তিন প্রজাতির বড়ইয়ের মধ্যে বল সুন্দরী দেখতে ঠিক আপেলের মতো। ওপরের অংশে হালকা সিঁদুর রং। বাউকুল ও আপেল কুলের শঙ্করায়নের মাধ্যমে সেটি উদ্ভাবিত হয়েছে। অপরদিকে কাশ্মীরি বড়ইয়ের রঙ ঠিক যেন আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল। তার বাগানে ফলন হওয়া প্রতিটি জাতের বড়ই বেশ মিষ্টি।

আগামীতে রেজাউল করিম তার ছয় বিঘা জমি বড়ই আবাদের আওতায় আনবেন বলে জানান।

বন বিভাগের বালিঝুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা তাদের নিজস্ব জমিতে বড়ই চাষ করছে। এতে বন্য হাতির আক্রমণ কিছুটা কমে আসবে। কারণ হাতি কাঁটাযুক্ত গাছ এড়িয়ে চলে। এ কারণে বড়ই আবাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের লেবু চাষেও উৎসাহিত করা হচ্ছে।

শ্রীবরদীর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, আমরা বরাবরই পাহাড়ি কৃষকদের উচ্চমূল্যের ফল বাগান তৈরি করতে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় এবার গারো পাহাড়ে বড়ই আবাদ শুরু হয়েছে।

আগামীতে বড়ই চাষে পাহাড়ি কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমানকেই এই মুহূর্তে দরকার : বিএনপিনেতা শামীম আহমেদ

বড়ই আবাদে দুই লাভ দেখছে শেরপুরের বনাঞ্চলের চাষীরা

আপডেট সময় ০৭:২৫:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর, বাংলারচিঠিডটকম : বড়ই আবাদে দুই লাভ দেখছে শেরপুরের বনাঞ্চল ঘেরা শ্রীবরদীর চাষিরা। বড়ই চাষিরা জানায়, এই ফল আবাদের জন্য গারো পাহাড়ের মাটি উপযুক্ত হওয়ায় স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদন যেমন হচ্ছে অন্যদিকে এই গাছ কাঁটাযুক্ত হওয়ায় বন্যহাতির দল ভয়ে লোকালয়ে হানা দিতে সাহস হারাচ্ছে। ফলে বড়ইয়ের বেশী উৎপাদনে যেমন তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন সেই সাথে হাতির আক্রমণ কিছুটা ঠেকাতে পেরে রাতে নিজ ঘরে নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাতে পারছেন।

জানা যায়, অন্য ফসল চাষ করে কয়েক দফা বন্যহাতির আক্রমণ লোকসান গুনে এবার মিশ্র জাতের বড়ই আবাদে সফলতা পেয়েছেন উপজেলার কর্ণঝোড়া বাবেলাকোনা গ্রামসহ আশাপাশের অন্যান্য গ্রামের কৃষকরা। চলতি মৌসুমে ওইসব এলাকায় আপেল কুলসহ কাশ্মিরী ও বলসুন্দরী জাতের বড়ই চাষ হচ্ছে।

শামীম মোল্লা নামে এক সফল চাষী জানান, বাবেলাকোনায় তার চার বিঘা জমিতে কাশ্মীরি, আপেল ও বল সুন্দরী জাতের বড়ই চারা রোপণ করেন। প্রায় ১০ মাস আগে ওইসব চারা তিনি বগুড়া জেলা থেকে সংগ্রহ করে আনেন। বর্তমানে সেসব গাছে ব্যাপক পরিমাণ বড়ই ধরে গাছ ঝুঁকে পড়েছে। এরমধ্যে পাকা বড়ই বিকি-কিনিও শুরু হয়েছে।

শামীম মোল্লা বলেন, বাগানের ৬শ’ গাছের মধ্যে এখন ৪শ’ গাছে ফলন হচ্ছে। সার ও পরিচর্যা বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা।

তিনি আশা করছেন এ বছরই তার খরচের সব টাকা উঠিয়ে লাভের মুখ দেখবেন। আর পরবর্তী বছর থেকে লাভের পরিমাণ আরও বাড়বে।

স্থানীয় পাইকার আফজাল মিয়া বলেন, পাহাড়ে উৎপাদিত বড়ই মান ভেদে প্রতিমণ ১৬শ থেকে দুই হাজার টাকা মণ দরে তারা কিনে থাকেন।

জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বনাঞ্চলে ঘুরতে আসা পর্যটকরা জানান, পাহাড়ের বাগানে থোকা থোকা বড়ই ঝুলে থাকার দৃশ্য চোখ জুড়িয়ে যায়।

পর্যটক রাইসুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রেহেনা পারভীন বলেন, তারা এই সু-স্বাদু বড়ই খেয়েছেন। সেই সাথে আত্মীয়-স্বজনদের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

রেজাউল করিম নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, শামীমের বাগানে তিন প্রজাতির বড়ইয়ের মধ্যে বল সুন্দরী দেখতে ঠিক আপেলের মতো। ওপরের অংশে হালকা সিঁদুর রং। বাউকুল ও আপেল কুলের শঙ্করায়নের মাধ্যমে সেটি উদ্ভাবিত হয়েছে। অপরদিকে কাশ্মীরি বড়ইয়ের রঙ ঠিক যেন আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল। তার বাগানে ফলন হওয়া প্রতিটি জাতের বড়ই বেশ মিষ্টি।

আগামীতে রেজাউল করিম তার ছয় বিঘা জমি বড়ই আবাদের আওতায় আনবেন বলে জানান।

বন বিভাগের বালিঝুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা তাদের নিজস্ব জমিতে বড়ই চাষ করছে। এতে বন্য হাতির আক্রমণ কিছুটা কমে আসবে। কারণ হাতি কাঁটাযুক্ত গাছ এড়িয়ে চলে। এ কারণে বড়ই আবাদের পাশাপাশি স্থানীয়দের লেবু চাষেও উৎসাহিত করা হচ্ছে।

শ্রীবরদীর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার বলেন, আমরা বরাবরই পাহাড়ি কৃষকদের উচ্চমূল্যের ফল বাগান তৈরি করতে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় এবার গারো পাহাড়ে বড়ই আবাদ শুরু হয়েছে।

আগামীতে বড়ই চাষে পাহাড়ি কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।