আবাহনীর হ্যাট্টিক শিরোপা

বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক ❑ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ(ডিপিএল) ক্রিকেটে হ্যাট্টিক শিরোপা জয় করলো আবাহনী লিমিটেড। এবারের বঙ্গবন্ধু ডিপিএল টি-২০ আসরের শিরোপা জিতে হ্যাটট্রিক পূরণ করলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ্য পুত্র শেখ কামাল প্রতিষ্ঠিত আবাহনী।

২৬ জুন সুপার লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচে আবাহনী ৮ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংককে। এই জয়ের গত পাঁচ বছরের মধ্যে চতুর্থবারের মত ডিপিএলের শিরোপা জিতলো আবাহনী। ঢাকার শীর্ষ ক্লাব আবাহনীর এটি ২১তম শিরোপা।

এবারের লিগে ১৬ খেলায় ২৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে শিরোপা নিশ্চিত করলো আবাহনী। ১৬ খেলায় ২২ পয়েন্ট নিয়ে রানার্স-আপ হলো প্রাইম ব্যাংক।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে আবাহনী। ব্যাট হাতে ইনিংস শুরু করে প্রথম বলেই উইকেট হারায় আবাহনী।

ওপেনার মোহাম্মদ নাইমকে শিকার করেন প্রাইম ব্যাংকের পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। পরের ওভারে আবাহনী শিবিরে দ্বিতীয় ধাক্কা দেন আরেক পেসার রুবেল হোসেন। আরেক ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারকে ৩ রানের বেশি করতে দেননি রুবেল। ফলে ১৫ রানে দুই ওপেনারকে হারায় আবাহনী।

শুরুর ধাক্কাটা সামলে উঠতে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন লিটন দাস। ভালো শুরু করেও সেটি ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৩ বলে ১৯ রান করেন লিটন।

দলীয় ৩১ রানে লিটনের বিদায়ে আরও চাপে পড়ে আবাহনী। এই চাপকে দারুনভাবে কাটিয়ে তুলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন। শুরুর দিকে সাবধানে খেলতে থাকেন তারা। তবে উইকেটে সেট হয়ে রানের চাকা সচল করেন শান্ত-মোসাদ্দেক। দলের স্কোর তিন অংকে পৌঁছে দেন তারা।

দলীয় ১০১ রানে বিচ্ছিন্ন হন শান্ত-মোসাদ্দেক। প্রাইম ব্যাংককে ব্রেক-থ্রু এনে দেন ডান-হাতি পেসার রুবেল মিয়া। ৪০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৫ রান করেন শান্ত। ৬১ বলে ৭০ রান যোগ করেন শান্ত-মোসাদ্দেক।

ইনিংসের শেষ দিকে দ্রুত রান তুলেছেন আফিফ হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। অন্যপ্রান্ত ধরে খেলেছেন মোসাদ্দেক। আফিফ ৭ বলে ১২ ও সাইফুদ্দিন ১৩ বলে অপরাজিত ২১ রান করেন। তার ইনিংসে ২টি ছক্কা ছিলো। দ্রুত রান তুলতে না পারলেও, ৩৯ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ৪০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন মোসাদ্দেক। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন আবাহনী। প্রাইম ব্যাংকের রুবেল ২২ রানে ২ উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ১৫১ রানের টার্গেটে ৩ ওভারের মধ্যে দুই উইকেট হারায় প্রাইম ব্যাংক। ওপেনার রনি তালুকদার ১ ও অধিনায়ক এনামুল হক ১৩ রান করে আবাহনীর পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের শিকার হন।

২০ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ম্যাচে ফেরার পরিকল্পনায় ছিলো প্রাইম ব্যাংক। কিন্তু তখনই প্রাইম ব্যাংকের মিডল-অর্ডার চেপে ধরেন আবাহনীর পেসার মেহেদি হাসান রানা ও স্পিনার আরাফাত সানি। এক পর্যায়ে ৬৬ রান তুলতেই পঞ্চম উইকেট হারায় প্রাইম ব্যাংক।

এক প্রান্ত আগলে রেখে ৪১ রানে আউট হন ওপেনার রুবেল মিয়া। এরপর টেল-এন্ডাররা কেউ ব্যাট হাতে দাঁড়াতে না পারলেও, প্রাইম ব্যাংকের আশার আলো ছিলেন অলক কাপালি। ২টি করে চার-ছক্কায় দারুন ছন্দে ছিলেন তিনি।

তবে ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে ১৬ রান প্রয়োজন পড়ে প্রাইম ব্যাংকের। কাপালির ব্যাটে স্বপ্ন দেখছিলো প্রাইম ব্যাংক। কিন্তু শেষ ওভারে পেসার শহিদুল ইসলামের প্রথম তিন বলে রান নিতে পারেননি কাপালি। চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন কাপালি। তাই শেষ দুই বলে ১০ রান দরকার পড়ে প্রাইম ব্যাংকের।

কিন্তু ঐ শেষ দুই বলে ১ রান পায় প্রাইম ব্যাংক। এতেই ম্যাচ হেরে বসে তারা। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪২ রান করে প্রাইম ব্যাংক। ১৭ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৭ বলে অপরাজিত ৩৪ রান করেন কাপালি। আবাহনীর সাইফুদ্দিন ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন সাইফুদ্দিন।