জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
করোনা সংক্রমণ রোধে জামালপুর পৌরসভা এলাকায় জেলা প্রশাসন আরোপিত বিধিনিষেধ প্রতিপালন পর্যবেক্ষণ করতে আকস্মিক রাতে রাস্তায় নামেন জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটুস লরেন্স চিরান। এ সময় তিনি গাড়ি রেখে হেঁটে ঘুরে ঘুরে মাস্ক বিতরণ এবং স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানও চালান। ২৪ জুন রাত ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলে তার এ অভিযান।
করোনা সংক্রমণ রোধে সাধারণত দিনের বেলা নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়ে থাকে। ২৪ জুন রাতে আকস্মিক ইউএনওকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে রাস্তায় হাঁটতে দেখেই খবর রটে যায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের। তাকে দেখে বিধিনিষেধের মধ্যেও রাতে খোলা থাকা অনেক দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু না, কাউকে জরিমানার শাস্তি নয়। জেলা প্রশাসনের জারিকৃত বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনার জন্য তাদের সহযোগিতা চান তিনি। তাদের উদ্দেশে জামালপুরসহ সারাদেশে করোনা সংক্রমণ রোধে যার যার অবস্থান থেকে সচেতন থাকারও আহ্বান জানান ইউএনও।
রাতের এই আকস্মিক অভিযানের সময় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অভিযানের সময় ইউএনও শহরের প্রধান সড়কের দয়াময়ী মোড়, বুড়ির দোকান মোড়, তমালতলা মোড় হয়ে সকাল বাজার পর্যন্ত হেঁটে প্রধান সড়কের দুই পাশের কিছু কিছু খোলা থাকা দোকানপাট বন্ধ করান। কঠোর বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীদের অনুরোধ করেন। মেডিকেল রোডে মার্কেটের সামনে রাত ১০টায় হালিম বিক্রেতার রিকশাভ্যানের সামনে হাজির হয়ে বেশ কয়েক জন যুবককে আড্ডা দিতে দেখতে পান তিনি। সবাইকে তিনি বোঝালেন মাস্কের গুরুত্ব। জটলা ছেড়ে সবাই ঘরমুখো হলেন। হালিম বিক্রেতাও চলে গেলেন। তমালতলা মোড়ে একজন ফল ব্যবসায়ী বয়স্ক ব্যক্তি তাকে দেখে তড়িঘড়ি মাস্ক পরছিলেন। তাকেও বোঝালেন সঠিক নিয়মে সব সময় মাস্ক পরার জন্য। পরে তিনি প্রধান রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পথচারী, রিকশাচালক ও সাধারণ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার নারী-পুরুষ ও শিশুদের মাঝে কাপড়ের তৈরি বারবার ধুয়ে পরার যোগ্য বিপুল পরিমাণ মাস্ক বিতরণ করেন। এ সময় সামর্থ আছে মাস্ক পরার এমন লোকজনও মাস্ক ছাড়া চলাচলের নজরে পড়ে তার। তাদেরকেও মাস্ক দিয়ে সঠিক নিয়মে মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন ইউএনও লিটুস লরেন্স চিরান।
প্রসঙ্গত, জামালপুর পৌরসভায় করোনা সংক্রমণের উচ্চঝুঁকি বিবেচনায় জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান গত ১৪ জুন ভোর থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত ১০টি কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। বিধিনিষেধের মধ্যে সন্ধ্যা ৬টা থেকে দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবসায়ী বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে রাতেও তাদের দোকানপাট খোলা রাখেন। অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে না আসার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেক মানুষকেই রাতেও অযথা ঘোরাফেরা ও আড্ডা দিতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে অনেকেরই মাস্কপরা ছাড়াও ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। রাতের পরিস্থিতি দেখতেই আকস্মিক এ অভিযান পরিচালনা করেন ইউএনও। তার এই অভিযান বেশ সাড়া ফেলে।