ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষায় জামালপুর ডিসির অঙ্গীকার খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজ : সভাপতি এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিদ্যোৎসাহী কাফি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে নেই শান্ত-মুশফিক-হৃদয়, এক বছর পর দলে ফিরলেন আফিফ ব্রিকসকে কড়া হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন একটি ‘অপপ্রচার’ : কূটনীতিকদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচারের বিপরীতে সত্য তুলে ধরুন : সাংবাদিকদের প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বকশীগঞ্জে উপজেলা যুবদলের আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ নকলায় শহিদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত মেলান্দহে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তাঁতীলীগনেতার রশিদপুরে আ.লীগনেতা সাত্তার ও তার স্ত্রী হাফেজার ‘জিনের বাদশা’ কার্যক্রমে নিঃস্ব বহু মানুষ

করোনাকালে জামালপুরে পত্রিকা বিক্রেতাদের দুর্দিন

সংবাদপত্র পাঠকের কাছে যাওয়ার আগে হকারদের প্রস্তুতি৷ ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সংবাদপত্র পাঠকের কাছে যাওয়ার আগে হকারদের প্রস্তুতি৷ ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, জামালপুর প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জাতীয় ছুটি থাকায় সংবাদপত্র বিক্রি অনেক কমে গেছে। বিক্রি না হওয়ায় এজেন্ট ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের অনেকেই পত্রিকা আনা বন্ধ করে দিয়েছেন। করোনা ও চলমান লকডাউনের কারণে জামালপুর জেলায় পত্রিকা বিক্রেতাদের চরম দুর্দিন পোহাতে হচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে পত্রিকা বিক্রেতারা। করোনা আতঙ্কে প্রায় প্রতিষ্ঠান এবং অনেক অফিস আদালতে এমনকি বাসাবাড়িতে পত্রিকা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পাঠকরা। পত্রিকা বিক্রেতাদের বেশির ভাগেরই সামান্য আয়-রোজগার। এখন তাও বন্ধ হয়ে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে বাড়ি বাড়ি পত্রিকা সরবরাহ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করলেও অর্থকষ্টে তারা দিশেহারা অবস্থায় আছেন। কষ্টে থাকলেও তাদের পাশে কেউ নেই।

এ কারণে পত্রিকা বিক্রেতারা এখন দিশেহারা। অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়ে দিনমজুরের কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করে আসছে। করোনাকালিন সরকারি কোন প্রণোদনা বা অনুদানও পাননি তারা। ২০ জুন সকালে জামালপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় পত্রিকা বিক্রেতাদের সাথে কথা বললে তারা এসব তথ্য জানায়।

এদিকে, প্রায় সবকটি জাতীয় পত্রিকা গণসচেতনতায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, করোনাভাইরাস পত্রিকার কাগজের মাধ্যমে ছড়ায় না। তারপরেও বিক্রি তেমন বাড়েনি। বিক্রিত পত্রিকার বিল তুলতেও হকারদের বর্তমান পরিস্থিতিতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সময়মতো পাওনা না পেয়ে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন।

পত্রিকা বিক্রেতা (হকার) ময়নাল জানান, দীর্ঘদিন যাবত আমি এই পেশায় আছি। আমরা তো চাইলেই এখন অন্য পেশায় যেতে পারি না। করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল-কলেজ ও অফিস-আদালত বন্ধ। ফলে এসব জায়গায় পত্রিকা বিক্রি হচ্ছে না। এমনকি বাসাবাড়িতেও অনেকে পত্রিকা রাখছেন না। দু-একজন হকারের পাশাপাশি অন্য ব্যবসা আছে, বাকিদের তো পত্রিকা বিক্রি করেই সংসার চলে। আমরা অনেক কষ্টে আছি।

জামালপুর হকার মালিক সমিতির সভাপতি ও পত্রিকার এজেন্ট ওমর ফারুক জানান, করোনা ও চলমান লকডাউনের কারণে প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে গেছে। পত্রিকা বিলি করার মত এখন আর কোন জায়গা নেই। এক সময় ঢাকা থেকে জাতীয় পত্রিকার প্রায় ৮ হাজার সংখ্যা আসতো। চলমান করোনার জন্য এখন ২ থেকে আড়াই হাজারের মত আসে। এই ব্যবসা এখন টিকিয়ে রাখায় কঠিন হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, করোনার আগে জেলায় ১০০ জনের মত হকাররা পত্রিকা বিক্রি করতো। এখন কমে গিয়ে ৪০ জনের মত পত্রিকা বিক্রি করছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে চলেও গেছে। তিনি আরও বলেন, সারাদেশের খবরা-খবর জামালপুরের পাঠকের কাছে আমরাই সবার আগে পৌঁছে দিতাম। কিন্তু করোনার জন্য সব কিছু বন্ধ থাকায় এখন আমাদের দুর্দিন যাচ্ছে। আমাদের সহযোগিতা করারও কেউ নেই। তিনি প্রণোদনা বা অনুদান দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

জামালপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক লুৎফর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, পত্রিকার হকাররা হলো সংবাদপত্রের প্রাণ। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অন্যান্য প্যাকেজের মতো পত্রিকার হকারদের খুঁজে আলাদা তালিকা তৈরি বা তাদের পৃথকভাবে অনুদান দেওয়ার দাবি জানাই।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষায় জামালপুর ডিসির অঙ্গীকার

করোনাকালে জামালপুরে পত্রিকা বিক্রেতাদের দুর্দিন

আপডেট সময় ১০:৪৪:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুন ২০২১
সংবাদপত্র পাঠকের কাছে যাওয়ার আগে হকারদের প্রস্তুতি৷ ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা, জামালপুর প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম

চলমান করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জাতীয় ছুটি থাকায় সংবাদপত্র বিক্রি অনেক কমে গেছে। বিক্রি না হওয়ায় এজেন্ট ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের অনেকেই পত্রিকা আনা বন্ধ করে দিয়েছেন। করোনা ও চলমান লকডাউনের কারণে জামালপুর জেলায় পত্রিকা বিক্রেতাদের চরম দুর্দিন পোহাতে হচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে পত্রিকা বিক্রেতারা। করোনা আতঙ্কে প্রায় প্রতিষ্ঠান এবং অনেক অফিস আদালতে এমনকি বাসাবাড়িতে পত্রিকা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে পাঠকরা। পত্রিকা বিক্রেতাদের বেশির ভাগেরই সামান্য আয়-রোজগার। এখন তাও বন্ধ হয়ে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে বাড়ি বাড়ি পত্রিকা সরবরাহ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করলেও অর্থকষ্টে তারা দিশেহারা অবস্থায় আছেন। কষ্টে থাকলেও তাদের পাশে কেউ নেই।

এ কারণে পত্রিকা বিক্রেতারা এখন দিশেহারা। অনেকে এ পেশা ছেড়ে দিয়ে দিনমজুরের কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করে আসছে। করোনাকালিন সরকারি কোন প্রণোদনা বা অনুদানও পাননি তারা। ২০ জুন সকালে জামালপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় পত্রিকা বিক্রেতাদের সাথে কথা বললে তারা এসব তথ্য জানায়।

এদিকে, প্রায় সবকটি জাতীয় পত্রিকা গণসচেতনতায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, করোনাভাইরাস পত্রিকার কাগজের মাধ্যমে ছড়ায় না। তারপরেও বিক্রি তেমন বাড়েনি। বিক্রিত পত্রিকার বিল তুলতেও হকারদের বর্তমান পরিস্থিতিতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সময়মতো পাওনা না পেয়ে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন।

পত্রিকা বিক্রেতা (হকার) ময়নাল জানান, দীর্ঘদিন যাবত আমি এই পেশায় আছি। আমরা তো চাইলেই এখন অন্য পেশায় যেতে পারি না। করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল-কলেজ ও অফিস-আদালত বন্ধ। ফলে এসব জায়গায় পত্রিকা বিক্রি হচ্ছে না। এমনকি বাসাবাড়িতেও অনেকে পত্রিকা রাখছেন না। দু-একজন হকারের পাশাপাশি অন্য ব্যবসা আছে, বাকিদের তো পত্রিকা বিক্রি করেই সংসার চলে। আমরা অনেক কষ্টে আছি।

জামালপুর হকার মালিক সমিতির সভাপতি ও পত্রিকার এজেন্ট ওমর ফারুক জানান, করোনা ও চলমান লকডাউনের কারণে প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানই বন্ধ হয়ে গেছে। পত্রিকা বিলি করার মত এখন আর কোন জায়গা নেই। এক সময় ঢাকা থেকে জাতীয় পত্রিকার প্রায় ৮ হাজার সংখ্যা আসতো। চলমান করোনার জন্য এখন ২ থেকে আড়াই হাজারের মত আসে। এই ব্যবসা এখন টিকিয়ে রাখায় কঠিন হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, করোনার আগে জেলায় ১০০ জনের মত হকাররা পত্রিকা বিক্রি করতো। এখন কমে গিয়ে ৪০ জনের মত পত্রিকা বিক্রি করছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে চলেও গেছে। তিনি আরও বলেন, সারাদেশের খবরা-খবর জামালপুরের পাঠকের কাছে আমরাই সবার আগে পৌঁছে দিতাম। কিন্তু করোনার জন্য সব কিছু বন্ধ থাকায় এখন আমাদের দুর্দিন যাচ্ছে। আমাদের সহযোগিতা করারও কেউ নেই। তিনি প্রণোদনা বা অনুদান দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

জামালপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক লুৎফর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, পত্রিকার হকাররা হলো সংবাদপত্রের প্রাণ। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত অন্যান্য প্যাকেজের মতো পত্রিকার হকারদের খুঁজে আলাদা তালিকা তৈরি বা তাদের পৃথকভাবে অনুদান দেওয়ার দাবি জানাই।