: জাহিদুর রহমান উজ্জল:
নাটক বা থিয়েটার সব সময় মানুষের মনে ও চেতনায় এক উচ্চস্থান পেয়ে এসেছে। নাটক বলতেই আমাদের মনে আসে শেকসপিয়রের নাম। তাঁকে বলা হয় বিশ্বের অগ্রণী নাট্যকার। তবে নাটক মানে শুধু শেকসপিয়র নন, কালিদাস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাদল সরকার, বিজন ভট্টাচার্য, দীনবন্ধু মিত্র নয় আমাদের দেশে সেলিম আলদীন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মান্নান হীরা এবং আমাদের আসাদুল্লাহ ফারাজী নাম।
নাটক ‘সমাজের দর্পণ’। সমাজের চিত্রকে নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরাই নাট্যকারের কাজ। আর এই নাটকের মানুষ প্রিয় আসাদুল্লাহ ফারাজী। তিনি নাটক লিখেন এবং অভিনয় করেন।এক কথায় তিনি নাটকের ফেরিওয়ালা। সমাজের অসঙ্গতিগুলো চোখে আঙ্গুল দিতে তিনি নাটক লেখেন। শত শত শব্দগুলি একত্রে করে তিনি নাটক মঞ্চায়ন করেন। গ্রাম থেকে নাটক লেখে রাজধানীর অভিজাত থিয়েটার হলে নাট্য মহলে একজন কীর্তিমান মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছেন। এমন প্রতিভাবান মানুষ কজনই বা জন্মে। তাঁকে ওপারের বিখ্যাত নাট্যকার বাদল সরকারের সাথে তুলনা করা চলে।
আসাদুল্লাহ ফারাজী নাটককে তিনি গণমানুষের কাছে চিনিয়ে দিতে কাজ করছেন। গ্রাম থিয়েটারের সাথে রয়েছেন দীর্ঘ সময়। জামালপুরের মেলান্দহের মতো একটি জায়গায় বসে শহীদ সমর থিয়েটার চর্চা করেন। মননে মগজে লালন করছেন নাটকের ভবিষ্যৎ। নাটক নিয়ে তিনি ফেরি করে চলছেন। মানুষের অব্যক্ত কথামালাকে সাজিয়ে সাজিয়ে নাটকের ফ্রেমে বন্দি করেন। ‘শহীদ সমর থিয়েটার’ সেই ১৯৮৩ সাল থেকেই এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকে এখনো কাজ করে চলেছেন তিনি। নাটকের দর্শন ও বিষয়গুলোকে তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেন।
ফারাজী তার ‘সী মোরগ’ নাটকে সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। মহিলা সমিতি মঞ্চে এই নাটকটি ২৮৯ বার প্রদর্শন হয়েছে। নাট্যকার এই নাটকের মাধ্যমে প্রশংসিত হয়েছেন।
এ ছাড়াও ‘বীরাঙ্গণা বিমলারা’, ‘সী মোরগ’ ও ‘সোহাগী বাঈদানীর ঘাট’ বিটিভির মঞ্চে অভিনীত হয়েছে। ‘বিরাঙ্গণা বিমলারা’, ‘রাইক্ষসের ক্ষিদা’ ও ‘বারতপুরের ক্যাচাল’ নাটকগুলো গ্রাম থিয়েটারের অনেক সংগঠন মঞ্চস্থ করেছে। নিজ দল শহীদ সমর থিয়েটার তাঁর প্রায় সবগুলো নাটক মঞ্চে এনে দর্শকনন্দিত হয়েছে। তাঁর খ্যাতনামা কয়েকটি নাটক নিয়ে ‘নাটক সমগ্র-১’ বই প্রকাশিত হয়েছে।
১৯৫৩ সালের ১৯ জুন জন্ম নেয়া আজন্ম নাটকের সেবক আসাদুল্লাহ ফারাজী শত বছর বেঁচে থাকুক এটাই কাম্য।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট