ঢাকা ০৪:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মাদকবিরোধী প্রীতি ফুটবল খেলায় জামালপুর ফুটবল একাডেমির জয় জামালপুরে কৃষকদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত সামাজিক শক্তি দিয়েই সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করবো : ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমান ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর হার প্রাক-কোভিড পর্যায়ে ফিরে এসেছে : ডব্লিউএইচও সিরিয়ায় দুই দিনে ৪৮০ দফা হামলা ইসরাইলের অপরাজেয় বাংলাদেশের সংযোগ প্রকল্পের উদ্যোগে মানবাধিকার দিবস উদযাপিত ইসলামপুরে জেলা প্রশাসকের পরিদর্শন, মতবিনিময়, ভিক্ষুকদের ছাগল বিতরণ জামালপুরে শিশুদের বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় সমস্যায় জর্জরিত দেওয়ানগঞ্জ রেলস্টেশনের নির্মাণ কাজ বন্ধ জামালপুরে সাংবাদিকদের সাথে গণতন্ত্রমঞ্চের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময়

শেরপুরে মাদরাসা শিক্ষকের কাছে কাবিননামা চেয়ে পোশাক শ্রমিকের অনশন

অনশনকারি কামরুন্নাহার। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

অনশনকারি কামরুন্নাহার। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় বিয়ের কাবিননামার দাবিতে মাদরাসা শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেছে পোশাক শ্রমিক এক প্রেমিকা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামে। অনশনকারি ওই নারীর নাম কামরুন্নাহার (২৯)। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের কোরাজ মিয়ার কন্যা। কামরুন্নাহার গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার রোয়া ফ্যাশনের একজন পোশাক শ্রমিক।

অন্যদিকে অভিযুক্ত ওই মাদরাসা শিক্ষকের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি চকপাড়া গ্রামের আকাবর আলীর ছেলে। রফিকুল স্থানীয় পানবর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও ২ সন্তানের জনক।

এ ঘটনার পর থেকে রফিকুল ইসলাম গা-ঢাকা দিয়েছে।

এর প্রতিকার চেয়ে কামরুন্নাহার ইতোমধ্যে ইউএনও এবং থানা পুলিশে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

৮ জুন বিকালে কামরুন্নাহার বলেন, তার সাথে শিক্ষক রফিকুল ইসলামের ছোট বোন আলেয়া (২৭) পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। সে সুবাদে রফিকুল ইসলাম তার বোনের কাছে গাজীপুরে মাঝে মধ্যে বেড়াতে আসতো। এক পর্যায়ে রফিকুলের সাথে তার মন দেওয়া নেওয়া শুরু হয়। এ সম্পর্ক চলে প্রায় ৭ বছর। এই সময়ের মধ্যে রফিকুল তাকে জানায়নি সে বিবাহিত। প্রেম চলাকালিন তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে রফিকুলকে বিয়ে করার জন্য বললে সে এক মৌলভী দিয়ে বিয়ে পড়ান কিন্তু ওই সময়ে কাবিননামা সম্পন্ন হয়নি। গত ১৭ মে কাবিননামা করে দিতে বললে জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কুরুয়া বাজারের মন্টু নামে এক কাজীর মাধ্যমে একটি কাবিননামা তৈরি করা হয়। এ সময় ওই কাজীর কাছে কাবিননামার নকল চাইলে সে আগামী ৮ দিন পর তা দেওয়া হবে বলে জানায়। নির্দিষ্ট সময় পর কাবিনের নকল আনতে ওই এলাকায় গেলে ওই কাজীর কোন হদিস পাওয়া যায়নি। পরে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ৭ জুন ঝিনাইগাতীর ইউএনও এবং থানা পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এছাড়া কাবিননামার দাবিতে অনশন শুরু করি।

রফিকুল ইসলামের ছোট বোন আলেয়া জানায়, কামরুন্নাহার ঝিনাইগাতীতে তার ভাইয়ের গ্রামের বাড়িতেও বেড়াতে আসতো। বিয়ের কাবিন না হলেও সংসার করেন তারা। এক পর্যায়ে কামরুন্নাহার বিয়ের কাবিনের জন্য চাপ দিলে রফিকুল নানাভাবে টালবাহানা শুরু করে। উপায়ান্ত না পেয়ে কামরুন্নাহার অনশন শুরু করে। এ ঘটনার পর থেকে তার ভাই গা-ঢাকা দিয়েছে।

এক প্রশ্নের জাবাবে আলেয়া বলেন, আমার বান্ধবিকে বিয়ে করবে বলে ভাই রফিকুল স্ত্রী ও সন্তানদের কথা কামরুন্নাহারকে না জানাতে অনুরোধ করে। তার স্ত্রী ঝিনাইগাতী শহরে থাকে আর গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবাকে দেখার মতো কেউ নেই। এ কারণে বাড়িতে একজন কাজের লোকের দরকার। তাই কামরুন্নাহারকে সে বিয়ে করতে চেয়েছিল।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিনুর রহমান উকিল অনশনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ইসলাম এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ঘটনাস্থল যেহেতু গাজীপুর তাই মামলা সেখানেই হওয়ার কথা। তারপরও এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মাদকবিরোধী প্রীতি ফুটবল খেলায় জামালপুর ফুটবল একাডেমির জয়

শেরপুরে মাদরাসা শিক্ষকের কাছে কাবিননামা চেয়ে পোশাক শ্রমিকের অনশন

আপডেট সময় ০৯:০৩:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুন ২০২১
অনশনকারি কামরুন্নাহার। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় বিয়ের কাবিননামার দাবিতে মাদরাসা শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেছে পোশাক শ্রমিক এক প্রেমিকা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামে। অনশনকারি ওই নারীর নাম কামরুন্নাহার (২৯)। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের কোরাজ মিয়ার কন্যা। কামরুন্নাহার গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার রোয়া ফ্যাশনের একজন পোশাক শ্রমিক।

অন্যদিকে অভিযুক্ত ওই মাদরাসা শিক্ষকের নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি চকপাড়া গ্রামের আকাবর আলীর ছেলে। রফিকুল স্থানীয় পানবর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও ২ সন্তানের জনক।

এ ঘটনার পর থেকে রফিকুল ইসলাম গা-ঢাকা দিয়েছে।

এর প্রতিকার চেয়ে কামরুন্নাহার ইতোমধ্যে ইউএনও এবং থানা পুলিশে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

৮ জুন বিকালে কামরুন্নাহার বলেন, তার সাথে শিক্ষক রফিকুল ইসলামের ছোট বোন আলেয়া (২৭) পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। সে সুবাদে রফিকুল ইসলাম তার বোনের কাছে গাজীপুরে মাঝে মধ্যে বেড়াতে আসতো। এক পর্যায়ে রফিকুলের সাথে তার মন দেওয়া নেওয়া শুরু হয়। এ সম্পর্ক চলে প্রায় ৭ বছর। এই সময়ের মধ্যে রফিকুল তাকে জানায়নি সে বিবাহিত। প্রেম চলাকালিন তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে রফিকুলকে বিয়ে করার জন্য বললে সে এক মৌলভী দিয়ে বিয়ে পড়ান কিন্তু ওই সময়ে কাবিননামা সম্পন্ন হয়নি। গত ১৭ মে কাবিননামা করে দিতে বললে জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কুরুয়া বাজারের মন্টু নামে এক কাজীর মাধ্যমে একটি কাবিননামা তৈরি করা হয়। এ সময় ওই কাজীর কাছে কাবিননামার নকল চাইলে সে আগামী ৮ দিন পর তা দেওয়া হবে বলে জানায়। নির্দিষ্ট সময় পর কাবিনের নকল আনতে ওই এলাকায় গেলে ওই কাজীর কোন হদিস পাওয়া যায়নি। পরে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ৭ জুন ঝিনাইগাতীর ইউএনও এবং থানা পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এছাড়া কাবিননামার দাবিতে অনশন শুরু করি।

রফিকুল ইসলামের ছোট বোন আলেয়া জানায়, কামরুন্নাহার ঝিনাইগাতীতে তার ভাইয়ের গ্রামের বাড়িতেও বেড়াতে আসতো। বিয়ের কাবিন না হলেও সংসার করেন তারা। এক পর্যায়ে কামরুন্নাহার বিয়ের কাবিনের জন্য চাপ দিলে রফিকুল নানাভাবে টালবাহানা শুরু করে। উপায়ান্ত না পেয়ে কামরুন্নাহার অনশন শুরু করে। এ ঘটনার পর থেকে তার ভাই গা-ঢাকা দিয়েছে।

এক প্রশ্নের জাবাবে আলেয়া বলেন, আমার বান্ধবিকে বিয়ে করবে বলে ভাই রফিকুল স্ত্রী ও সন্তানদের কথা কামরুন্নাহারকে না জানাতে অনুরোধ করে। তার স্ত্রী ঝিনাইগাতী শহরে থাকে আর গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবাকে দেখার মতো কেউ নেই। এ কারণে বাড়িতে একজন কাজের লোকের দরকার। তাই কামরুন্নাহারকে সে বিয়ে করতে চেয়েছিল।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনিনুর রহমান উকিল অনশনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে মাদরাসা শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ইসলাম এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন।

থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ঘটনাস্থল যেহেতু গাজীপুর তাই মামলা সেখানেই হওয়ার কথা। তারপরও এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।