বিল্লাল হোসেন মন্ডল, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই যমুনার তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের হলকার চর, হাবরাবাড়ী ও টিনের চর এলাকার প্রায় ১ হাজার ৫০০ পরিবার ও সরকারের দেওয়া ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দুটি গুচ্ছগ্রাম। গত দুই বছরে ওই এলাকার প্রায় ৪ শতাধিক বসত-বাড়ি ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। হতাশায় ভোগছেন দুটি গুচ্ছ গ্রামসহ ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ১ হাজার ৫০০ পরিবার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর হলকা হাবড়াবাড়ি, টিনের চর প্রায় ১ হাজার ৫০০ পরিবার বসবাস করে আসছে। ২০১০ ও ২০১৬ সালে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থায়নের সরকারের দেওয়া হাবড়াবাড়ী গুচ্ছ গ্রামে ৬০ জন পরিবার ও চর হরিণধরায় গুচ্ছ গ্রামে ৭০ জন পরিবার দুটি গুচ্ছগ্রামে বসবাস করে আসছে। অসহায় পরিবারগুলো গত কয়েক বছরে গাছপালা লাগিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। এক সময় গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলো রাজার হালে জীবন যাপন করতো। বিগত কয়েক বছরে যমুনার করাল গ্রাসে তাদের ভিটামাটি, আবাদি জমি- সব কিছু হারিয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত গুচ্ছ গ্রামে দিনযাপন করছেন। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই যমুনা নদীর তীব্র ভাঙনে গুচ্ছ গ্রামের ১৩০ জন পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে। চলমান নদীভাঙন অব্যাহত থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই এই গুচ্ছগ্রাম যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এলাকাবাসী জানান, ইতিপূর্বে গুচ্ছ গ্রাম থেকে যমুনা নদী ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে চলতি বছর বর্ষা শুরু হতে না হতেই যমুনার তীব্র ভাঙনে নদী কাছে এসেছে।
ওই গুচ্ছগ্রামের বরকত আলী (৪৫) হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ভিটামাটি সব কিছু হারিয়ে সরকারের দেওয়া ছোট্ট ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিয়েছি। নদী যেভাবে ভাঙছে কোন সময় যমুনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে সরকারের দেওয়া গুচ্ছ গ্রাম।
চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান সেলিম খান জানান, গত কয়েক দিনের তীব্র নদী ভাঙনে কিছু পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, দুটি গুচ্ছগ্রামের ১৩০টি পরিবারের বসত-বাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। পানি উন্নয়ন মন্ত্রণালয় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নদী গর্ভে বিলীন হবে সরকারের দেওয়া গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারদের বসত-ঘর।
যমুনা নদীর ভাঙনের সংবাদ পেয়ে গুচ্ছগ্রাম পরিদর্শন করেছেন দেওয়ানগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হাসান, চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রাসেদুজ্জামান সেলিম খান ও উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান জানান, যমুনা তীব্র ভাঙন পরির্দশন করা হয়েছে। বিষয়টি লিখিত এবং মৌখিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা যেন ঘরগুলো স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে ঘরগুলো অন্য এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।