বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
স্থানীয় কতিপয় ব্যবসায়ীর বাধার কারণে জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। ড্রেন নির্মাণ শুরু হতে না হতেই ড্রেন নির্মাণের জন্য দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বকশীগঞ্জ পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের আওতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জামালপুরের ৮টি পৌরসভার উন্নয়নের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করেন।
“জামালপুরের আট পৌরসভা উন্নয়ন” নামে প্রকল্পটির মাধ্যমে জেলার ৮টি পৌরসভায় উন্নয়ন কাজ হবে। এই প্রকল্পের আওতায় বকশীগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগে পৌর শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি মাস্টার প্ল্যান হাতে নেয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে বকশীগঞ্জ পৌরসভা গঠনের পর থেকে কয়েকজন প্রশাসক দিয়ে পৌরসভার কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়। ২০১৯ সালের মার্চে বকশীগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর দায়িত্ব নেয়ার পর উন্নয়ন কার্যক্রমের গতি বেড়ে যায়। বকশীগঞ্জ পৌর এলাকায় বিভিন্ন রাস্তাঘাট নির্মাণ, পাকাকরণ করা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চললেও পৌর শহরে জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। বিশেষ করে বকশীগঞ্জ পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে পান হাটি মোড় রাস্তাটিতে বর্ষার সময় এলে পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও পুরাতন বাসস্ট্যান্ড হতে শ্রীবরদী সড়কেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও মালিবাগ কলেজ রোড ও উপজেলা পরিষদের মসজিদের পেছন দিয়ে নামাপাড়া রাস্তাটিতে জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। জলাবদ্ধতার কারণে রিকশা, ভ্যান, পথচারী ও যান চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
স্থানীয়দের দাবি পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলেও জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকরী কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। তবে বকশীগঞ্জ সভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরের দাবি জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ীভাবে ড্রেন নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়া হলেও কতিপয় ব্যক্তির অসহযোগিতার কারণে ড্রেন নির্মাণে সমস্যা হচ্ছে
বকশীগঞ্জ পৌরসভার সচিব নুরুল আমিনের দাবি, ড্রেন নির্মাণের সুযোগ করে না দেওয়ায় বকশীগঞ্জ পৌরসভার ড্রেন নির্মাণের দুটি প্রকল্প হুমকির মুখে রয়েছে। এতে করে পৃথক দুটি প্রকল্পের ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
বকশীগঞ্জ পৌর শহেরর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে পান হাটি মোড় রাস্তার পাশে অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ড্রেন নির্মাণে আমাদের কোন আপত্তি নাই, তবে রাস্তার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সমস্যার কারণে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যেন ভাঙা না লাগে সেদিকেও নজর দেওয়া উচিত পৌর কর্তৃপক্ষের।
এদিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার পক্ষে গত সপ্তাহে পৌর শহরে রাস্তার দুপাশে ব্যক্তি মালিকানা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ম অনুযায়ী অপসারণের জন্য ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর। কিন্তু মেয়রের এই আল্টিমেটামকে গুরুত্ব দেননি ব্যবসায়ীরা।
বকশীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর জানান, বকশীগঞ্জ পৌরবাসীর নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে দুটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তির বাধা ও অসহযোগিতার কারণে ড্রেন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন নিয়ে অসুবিধা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীদের বার বার অনুরোধ করা সত্তে¡ও তারা সহযোগিতা করছেন না। তবে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা ও প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর।