ঢাকা ১২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামালপুরে গ্রাম আদালতে সাড়ে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায়

গ্রাম আদালত আইন বিষয়ে অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

গ্রাম আদালত আইন বিষয়ে অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর জেলার চারটি উপজেলায় গ্রাম আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪২ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জামালপুরে গ্রাম আদালত আইন ও নারীবান্ধব গ্রাম আদালত সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প এ সভার আয়োজন করে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ জামালপুরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের সভাপতিত্বে এ অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমান ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পটি শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু প্রকল্পটির মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে ছোটখাটো ঘটনায় বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হয়েছেন। তাদেরকে থানা বা জেলা আদালতে আসতে হয়নি। এতে তাদের সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হয়নি। এর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। গ্রাম আদালত আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ২০০৬ সালের আইন মোতাবেক পরিচালিত হয়। এই আদালতে নারী সংশ্লিষ্ট মামলায় নারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নারীবান্ধব গ্রাম আদালত নিশ্চিত করতেও বড় ভূমিকা রাখছে। তাই এই আদালতের সেবা সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গ্রাম আদালতের বিচারিক সুবিধার কথা জেলার চরাঞ্চলসহ সকল প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগণ বিশেষ করে বয়স্ক ও নারীদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এতে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক হাফিজ রায়হান সাদা, মোস্তফা মনজু, আনোয়ার হোসেন মিন্টু, আব্দুল আজিজ, ইউছুফ আলী, এম এ জলিল, ফজলে এলাহী মাকাম, সাইদ পারভেন তুহিন, সাইমুম সাব্বির শোভন প্রমুখ। সভায় মেলান্দহ থেকে আসা উপকারভোগী ঝর্ণা বেগম নামের এক নারী তার জমি বিক্রির টাকা আদায় বিষয়ে গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করে ২৫ হাজার টাকা ফিরে পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনার আগে গ্রাম আদালত আইন এবং এ কার্যক্রমের অগ্রগতি ও সাফল্য বিষয়ে টিভিসি প্রদর্শনের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরেন দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের জেলা ফেসিলিটেটর মালিক শামীম আখতার।

সভায় জানানো হয়, ইউএনডিপির অর্থায়নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় গ্রাম আদালত আইন বাস্তবায়ন ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে জামালপুরের চারটি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে সাত হাজার ৯৭টি মামলা দায়ের হয়। নিষ্পত্তি হয়েছে ছয় হাজার ৯০৪টি মামলা। এই আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪২ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুরে গ্রাম আদালতে সাড়ে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ আদায়

আপডেট সময় ০৬:৪২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
গ্রাম আদালত আইন বিষয়ে অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর জেলার চারটি উপজেলায় গ্রাম আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪২ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে জামালপুরে গ্রাম আদালত আইন ও নারীবান্ধব গ্রাম আদালত সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প এ সভার আয়োজন করে।

স্থানীয় সরকার বিভাগ জামালপুরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কবির উদ্দীনের সভাপতিত্বে এ অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মোকলেছুর রহমান ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পটি শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু প্রকল্পটির মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে ছোটখাটো ঘটনায় বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হয়েছেন। তাদেরকে থানা বা জেলা আদালতে আসতে হয়নি। এতে তাদের সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হয়নি। এর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। গ্রাম আদালত আগেও ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ২০০৬ সালের আইন মোতাবেক পরিচালিত হয়। এই আদালতে নারী সংশ্লিষ্ট মামলায় নারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নারীবান্ধব গ্রাম আদালত নিশ্চিত করতেও বড় ভূমিকা রাখছে। তাই এই আদালতের সেবা সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গ্রাম আদালতের বিচারিক সুবিধার কথা জেলার চরাঞ্চলসহ সকল প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র, সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগণ বিশেষ করে বয়স্ক ও নারীদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এতে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সাংবাদিক হাফিজ রায়হান সাদা, মোস্তফা মনজু, আনোয়ার হোসেন মিন্টু, আব্দুল আজিজ, ইউছুফ আলী, এম এ জলিল, ফজলে এলাহী মাকাম, সাইদ পারভেন তুহিন, সাইমুম সাব্বির শোভন প্রমুখ। সভায় মেলান্দহ থেকে আসা উপকারভোগী ঝর্ণা বেগম নামের এক নারী তার জমি বিক্রির টাকা আদায় বিষয়ে গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করে ২৫ হাজার টাকা ফিরে পাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনার আগে গ্রাম আদালত আইন এবং এ কার্যক্রমের অগ্রগতি ও সাফল্য বিষয়ে টিভিসি প্রদর্শনের মাধ্যমে বিস্তারিত তুলে ধরেন দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের জেলা ফেসিলিটেটর মালিক শামীম আখতার।

সভায় জানানো হয়, ইউএনডিপির অর্থায়নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলায় গ্রাম আদালত আইন বাস্তবায়ন ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে জামালপুরের চারটি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের গ্রাম আদালতে সাত হাজার ৯৭টি মামলা দায়ের হয়। নিষ্পত্তি হয়েছে ছয় হাজার ৯০৪টি মামলা। এই আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার ৬৪২ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে।