ঢাকা ১০:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ইউনেস্কোর বাংলাদেশ প্রতিনিধির সাক্ষাৎ জামালপুর সদর উপজেলা মৎস্যজীবীদলের সভাপতি হলেন সাইদুর, সম্পাদক জয়নাল সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপেও জয়ের ধারা ধরে রাখতে চান আফঈদা যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫ দেশে প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করার সম্মতি পেয়েছে ইসি মাদারগঞ্জে ট্রলি-বাইসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, এক কিশোরের পা বিচ্ছিন্ন ওসি খন্দকার শাকের জামালপুর জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত ৪৮ জন কৃতী শিক্ষার্থীকে বৃত্তির চেক দিল জামালপুর জেলা পরিষদ মেলান্দহে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তালবীজ রোপণ বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে জামায়াত নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় সেই শম্পা উঠলো নতুন ঘরে, সংসার চালাবে শম্পা এন্টারপ্রাইজ

মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অদম্য শিশু শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুদি দোকান উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিন ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অদম্য শিশু শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার নতুন ঘর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক বাবার রিকশা চালিয়ে জীবিকায় নামা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অদম্য সেই শিশু শম্পাদের ঘরে এখন খুশির বন্যা। সামাজিক যোগাযোগ ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শিশু শম্পার রিকশা চালানোর পেশার বিষয়টি নজরে আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শম্পার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে এই পরিবারকে বসবাসের জন্য একটি আধাপাকা ঘর ও আয়রোজগারের জন্য এক লাখ টাকায় একটি মুদি দোকান করে দিয়েছে জামালপুর জেলা ও সদর উপজেলা প্রশাসন। শম্পার পড়ালেখা ও নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য তাকে ২০ হাজার টাকার অনুদানও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর উপহারের নতুন আধাপাকা ঘর ও মুদি দোকান ‘শম্পা এন্টারপ্রাইজ’ উদ্বোধন উপলক্ষে ৩১ জানুয়ারি দুপুরে জামালপুর সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামে শম্পাদের বাড়ির সামনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামালপুর সদর উপজেলা প্রশাসন এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অদম্য শিশু শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুদি দোকান উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিন ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। এতে আরো বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হোসেন, সদরের এসিল্যাণ্ড মাহমুদা বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, কেন্দুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মনজু, কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নূরুল হক, সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আউয়াল আনসারী প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক তার বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শম্পার রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের সংবাদটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানতে পেরে আবেগ আপ্লুত হয়ে অসহায় এই পরিবারকে পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন। একই সাথে শম্পার শিশুশ্রম বন্ধ করে তাকে লেখাপড়া করার জন্য সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী শম্পার বাবা শফিকুল ইসলামকে ঢাকায় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শম্পাদের বসবাসের জন্য একটি আধা-পাকা ঘর নির্মাণ এবং পরিবারের আয়রোজগারের জন্য শম্পার বাবাকে এক লাখ টাকায় একটি মুদি দোকান চালু করে দিয়েছি।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এতটুক মেয়েটা যদি রিকশাচালিয়ে সংসারের হাল ধরতে পারে, তাহলে সে পড়ালেখাও করতে পারবে। তাই শম্পার পড়ালেখার খরচ এবং নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রী আরো ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন শম্পার জন্য। সেই টাকাও আজকে শম্পাকে দিয়েছি। শুধু এই শম্পা ও তার পরিবারই নয়, কোথাও কোন ভূমিহীন ও গৃহহীন অস্বচ্ছল অসহায় পরিবার থাকলে তাদের সবাইকেই পুনর্বাসন করার নির্দেশনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। কেউ অস্বচ্ছল থাকবে না এই দেশে। প্রশাসনের উদ্যোগে দারিদ্রতা দূরীকরণে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।

পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক ও সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিন অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে শম্পাদের জন্য নির্মিত আধা-পাকা ঘর উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার অনুদান ২০ হাজার টাকা তুলে দেন শম্পার হাতে। পরে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে করে দেওয়া শম্পাদের পরিবারের আয়রোজগারের অবলম্বন ‘শম্পা এন্টারপ্রাইজ’ নামের মুদি দোকান পরিদর্শন ও উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।

নতুন ঘরের সামনে বসে আছেন অদম্য শিশু শম্পা ও তার বাবা-মা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সতায়তা পেয়ে শিশু শম্পা বলেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার জন্য এতোকিছু করলেন, আমার আর রিকশাচালাতে হয় না। আমি ভালোমত পড়ালেখা করমু। পড়ালেখা শেষ করে আমি একটা চাকরির চেষ্টা করমু। মা-বাবারে কষ্ট করতে দিমু না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আমি সব সময় দোয়া করমু। আল্লাহয় যেন তারে সুস্থ রাখেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

এদিকে নতুন ঘর, মুদি দোকান ও শম্পার জন্য ২০ হাজার টাকার অনুদান পেয়ে খুবই খুশি হয়েছেন শিশু শম্পার বাবা শফিকুল ইসলাম ও মা নেবুজা বেগম। এই দম্পতি খুশিতে আপ্লুত হয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই অল্প বয়সের মেয়ে শম্পারে বাঁচাইছেন। এহন আর সে রিকশাচালায় না। যত কষ্টই আসুক শম্পারে পড়ালেখা করামু। যাতে ও একটা চাকরি করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

প্রসঙ্গত, সদরের নাকাটি গ্রামের দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক শফিকুল ইসলাম বছর পাঁচেক আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার এক পা ভেঙে যায়। পায়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে সবকিছু বিক্রি করে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। স্ত্রী নেবুজা বেগম ও মেয়ে শম্পাকে নিয়ে খুবই দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছিলেন শফিকুল। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালানোর খরচ ছাড়াও বাবার ওষুধ কেনার টাকা রোজগারের জন্য দেড় বছর আগে থেকে বাবার পেশায় হাল ধরে প্রতিদিন রিকশাভ্যান চালাতো শম্পা। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রে শম্পার রিকশাচালানোর সেই সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেয়ে অসহায় এই পরিবারে স্বস্তি ফিরে এল। শিশু শম্পা স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় শম্পার রিকশাচালনার পেশা বাদ দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতেও আর কোন বাধা রইল না। অসহায় শম্পাদের পুনর্বাসনের এই উদ্যোগটি স্থানীয়দের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় সেই শম্পা উঠলো নতুন ঘরে, সংসার চালাবে শম্পা এন্টারপ্রাইজ

আপডেট সময় ১০:২২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২১
মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অদম্য শিশু শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার নতুন ঘর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক বাবার রিকশা চালিয়ে জীবিকায় নামা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অদম্য সেই শিশু শম্পাদের ঘরে এখন খুশির বন্যা। সামাজিক যোগাযোগ ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শিশু শম্পার রিকশা চালানোর পেশার বিষয়টি নজরে আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শম্পার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে এই পরিবারকে বসবাসের জন্য একটি আধাপাকা ঘর ও আয়রোজগারের জন্য এক লাখ টাকায় একটি মুদি দোকান করে দিয়েছে জামালপুর জেলা ও সদর উপজেলা প্রশাসন। শম্পার পড়ালেখা ও নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য তাকে ২০ হাজার টাকার অনুদানও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর উপহারের নতুন আধাপাকা ঘর ও মুদি দোকান ‘শম্পা এন্টারপ্রাইজ’ উদ্বোধন উপলক্ষে ৩১ জানুয়ারি দুপুরে জামালপুর সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামে শম্পাদের বাড়ির সামনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জামালপুর সদর উপজেলা প্রশাসন এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে অদম্য শিশু শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার মুদি দোকান উদ্বোধন ও পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিন ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। এতে আরো বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হোসেন, সদরের এসিল্যাণ্ড মাহমুদা বেগম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, কেন্দুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মনজু, কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নূরুল হক, সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আউয়াল আনসারী প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক তার বক্তব্যে বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শম্পার রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের সংবাদটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জানতে পেরে আবেগ আপ্লুত হয়ে অসহায় এই পরিবারকে পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন। একই সাথে শম্পার শিশুশ্রম বন্ধ করে তাকে লেখাপড়া করার জন্য সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী শম্পার বাবা শফিকুল ইসলামকে ঢাকায় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শম্পাদের বসবাসের জন্য একটি আধা-পাকা ঘর নির্মাণ এবং পরিবারের আয়রোজগারের জন্য শম্পার বাবাকে এক লাখ টাকায় একটি মুদি দোকান চালু করে দিয়েছি।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এতটুক মেয়েটা যদি রিকশাচালিয়ে সংসারের হাল ধরতে পারে, তাহলে সে পড়ালেখাও করতে পারবে। তাই শম্পার পড়ালেখার খরচ এবং নতুন জামাকাপড় কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রী আরো ২০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন শম্পার জন্য। সেই টাকাও আজকে শম্পাকে দিয়েছি। শুধু এই শম্পা ও তার পরিবারই নয়, কোথাও কোন ভূমিহীন ও গৃহহীন অস্বচ্ছল অসহায় পরিবার থাকলে তাদের সবাইকেই পুনর্বাসন করার নির্দেশনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। কেউ অস্বচ্ছল থাকবে না এই দেশে। প্রশাসনের উদ্যোগে দারিদ্রতা দূরীকরণে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।

পরে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক ও সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিন অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে শম্পাদের জন্য নির্মিত আধা-পাকা ঘর উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার অনুদান ২০ হাজার টাকা তুলে দেন শম্পার হাতে। পরে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানে করে দেওয়া শম্পাদের পরিবারের আয়রোজগারের অবলম্বন ‘শম্পা এন্টারপ্রাইজ’ নামের মুদি দোকান পরিদর্শন ও উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।

নতুন ঘরের সামনে বসে আছেন অদম্য শিশু শম্পা ও তার বাবা-মা। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

সতায়তা পেয়ে শিশু শম্পা বলেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার জন্য এতোকিছু করলেন, আমার আর রিকশাচালাতে হয় না। আমি ভালোমত পড়ালেখা করমু। পড়ালেখা শেষ করে আমি একটা চাকরির চেষ্টা করমু। মা-বাবারে কষ্ট করতে দিমু না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আমি সব সময় দোয়া করমু। আল্লাহয় যেন তারে সুস্থ রাখেন। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

এদিকে নতুন ঘর, মুদি দোকান ও শম্পার জন্য ২০ হাজার টাকার অনুদান পেয়ে খুবই খুশি হয়েছেন শিশু শম্পার বাবা শফিকুল ইসলাম ও মা নেবুজা বেগম। এই দম্পতি খুশিতে আপ্লুত হয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের এই অল্প বয়সের মেয়ে শম্পারে বাঁচাইছেন। এহন আর সে রিকশাচালায় না। যত কষ্টই আসুক শম্পারে পড়ালেখা করামু। যাতে ও একটা চাকরি করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

প্রসঙ্গত, সদরের নাকাটি গ্রামের দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক শফিকুল ইসলাম বছর পাঁচেক আগে সড়ক দুর্ঘটনায় তার এক পা ভেঙে যায়। পায়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে সবকিছু বিক্রি করে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। স্ত্রী নেবুজা বেগম ও মেয়ে শম্পাকে নিয়ে খুবই দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছিলেন শফিকুল। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালানোর খরচ ছাড়াও বাবার ওষুধ কেনার টাকা রোজগারের জন্য দেড় বছর আগে থেকে বাবার পেশায় হাল ধরে প্রতিদিন রিকশাভ্যান চালাতো শম্পা। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রে শম্পার রিকশাচালানোর সেই সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পেয়ে অসহায় এই পরিবারে স্বস্তি ফিরে এল। শিশু শম্পা স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় শম্পার রিকশাচালনার পেশা বাদ দিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতেও আর কোন বাধা রইল না। অসহায় শম্পাদের পুনর্বাসনের এই উদ্যোগটি স্থানীয়দের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে।