ঢাকা ১০:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জামালপুর জেলা ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত মাহমুদপুরে বিদ্যুতায়িত হয়ে লাইনম্যানের মৃত্যু ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যা : বকশীগঞ্জে এনসিপি’র বিক্ষোভ মিছিল ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যা : প্রতিবাদে মাদারগঞ্জে বিক্ষোভ সমাবেশ ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যা : জামালপুরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল মাদারগঞ্জে সিলিং ফ্যানে ঝুলছিল ব্যবসায়ীর মরদেহ মাদারগঞ্জে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি উদ্বোধন ক্রীড়াবিদ আউয়ালের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত র‍্যাবের অভিযান : নালিতাবাড়ীতে ২৬০ বোতল ভারতীয় মদ জব্ধ সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ ৯-১ গোলে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে

রিকশাভ্যানচালক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শম্পার পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী

জামালপুরে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী রিকশাভ্যানচালক বাবার পেশায় হাল ধরা প্রাথমিক স্কুলছাত্রী শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা বুঝিয়ে দিতে অসহায় পরিবারটিকে নিয়ে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী রিকশাভ্যানচালক বাবার পেশায় হাল ধরা প্রাথমিক স্কুলছাত্রী শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা বুঝিয়ে দিতে অসহায় পরিবারটিকে নিয়ে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী দরিদ্র বাবার চিকিৎসার টাকার রোজগারে আর রিকশাভ্যান চালাতে হবে না জামালপুরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শম্পা খাতুনকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব, ফেসবুক ও কয়েকটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নজরে আসায় শিশুটির বাবার চিকিৎসা, পাকাঘর নির্মাণ, লেখাপড়া ও পরিবারের আয়ের উৎসসহ সবকিছুর দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২ ডিসেম্বর সকালে শম্পাদের জন্য বরাদ্দের পাকাঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এ সময় জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াছমিন ও কেন্দুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মনজুসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পাকাঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের পর সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনায় মোনাজাত করা হয়।

অসহায় এই পরিবারটির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিনকে সাথে নিয়ে ২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামে শিশু শম্পাদের বাড়িতে যান এবং অসহায় পরিবারের সদস্যদের সাথে বৈঠক করেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অ্যাম্বুলেন্সের করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় শম্পার বাবা দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী রিকশাভ্যানচালক শফিকুল ইসলামকে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সাংবাদিকদের জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক শফিুকল ইসলাম ভাসানীর চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের রিকশাভ্যান চালিয়ে তার বাবার চিকিৎসা ও সংসারের খরচ মেটানোর জন্য টাকা রোজগারের বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী অসহায় এই পরিবারটির জন্য দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি পাকাঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, শম্পার বাবা শফিকুলকে আজই অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হলো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেখানে তার প্রয়োজনীয় সব রকমের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সাথে অসহায় এই পরিবারটির আয়ের উৎস হিসেবে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করে দেওয়ার এবং শিশু শম্পার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাসহ পরিবারটির সবকিছুর ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী রিকশাভ্যানচালক শফিকুল ইসলাকে বরাদ্দ দেওয়া ঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

প্রসঙ্গত, নাকাটি গ্রামের দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক শফিকুল বছর পাঁচেক আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় তার এক পা ভেঙে যায়। পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করান তিনি। এতে তার সবকিছু বিক্রি করে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। তাদের সংসারে দুই মেয়ের মধ্যে শম্পার বড়বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। স্ত্রী নেবুজা বেগম ও শম্পাকে নিয়ে খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছিলেন শফিকুল। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালানোর খরচ ছাড়াও বাবার ওষুধ কেনার টাকা রোজগারের জন্য দেড় বছর আগে থেকে বাবার পেশায় হাল ধরে প্রতিদিন রিকশাভ্যান চালাতো শম্পা। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পাওয়ায় শম্পাকে এখন আর রিকশাভ্যান চালাতে হবে না।

সহায়তা পাওয়ায় শম্পা ও তার বাবা-মা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এতকিছু সহায়তা পেয়ে আনন্দের মুহূর্তে শম্পা ও তার বাবা-মায়ের কান্না থামাতে পারছিল না কেউ। এ সময় শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ছোট মেয়েটার কষ্ট দূর করে দিলেন। আমাদের একটা ঘর দিলেন। আমার চিকিৎসা করাবেন। এতকিছু পামু তা কল্পনাও করি নাই। আল্লাহয় প্রধানমন্ত্রীরে মেলা দিন বাঁচায়ে রাখুক, আমি সেই দোয়াই করি।

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জামালপুর জেলা ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

রিকশাভ্যানচালক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শম্পার পাশে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৬:০০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ ডিসেম্বর ২০২০
জামালপুরে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী রিকশাভ্যানচালক বাবার পেশায় হাল ধরা প্রাথমিক স্কুলছাত্রী শম্পাদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা বুঝিয়ে দিতে অসহায় পরিবারটিকে নিয়ে বৈঠক করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী দরিদ্র বাবার চিকিৎসার টাকার রোজগারে আর রিকশাভ্যান চালাতে হবে না জামালপুরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী শম্পা খাতুনকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইউটিউব, ফেসবুক ও কয়েকটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ নজরে আসায় শিশুটির বাবার চিকিৎসা, পাকাঘর নির্মাণ, লেখাপড়া ও পরিবারের আয়ের উৎসসহ সবকিছুর দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২ ডিসেম্বর সকালে শম্পাদের জন্য বরাদ্দের পাকাঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। এ সময় জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াছমিন ও কেন্দুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মনজুসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। পাকাঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের পর সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনায় মোনাজাত করা হয়।

অসহায় এই পরিবারটির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সদরের ইউএনও ফরিদা ইয়াছমিনকে সাথে নিয়ে ২ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামে শিশু শম্পাদের বাড়িতে যান এবং অসহায় পরিবারের সদস্যদের সাথে বৈঠক করেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অ্যাম্বুলেন্সের করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় শম্পার বাবা দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী রিকশাভ্যানচালক শফিকুল ইসলামকে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সাংবাদিকদের জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক শফিুকল ইসলাম ভাসানীর চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের রিকশাভ্যান চালিয়ে তার বাবার চিকিৎসা ও সংসারের খরচ মেটানোর জন্য টাকা রোজগারের বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী অসহায় এই পরিবারটির জন্য দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি পাকাঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, শম্পার বাবা শফিকুলকে আজই অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হলো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেখানে তার প্রয়োজনীয় সব রকমের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সাথে অসহায় এই পরিবারটির আয়ের উৎস হিসেবে একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করে দেওয়ার এবং শিশু শম্পার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাসহ পরিবারটির সবকিছুর ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ববরণকারী রিকশাভ্যানচালক শফিকুল ইসলাকে বরাদ্দ দেওয়া ঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

প্রসঙ্গত, নাকাটি গ্রামের দরিদ্র রিকশাভ্যানচালক শফিকুল বছর পাঁচেক আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় তার এক পা ভেঙে যায়। পঙ্গু হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করান তিনি। এতে তার সবকিছু বিক্রি করে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। তাদের সংসারে দুই মেয়ের মধ্যে শম্পার বড়বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। স্ত্রী নেবুজা বেগম ও শম্পাকে নিয়ে খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছিলেন শফিকুল। এই পরিস্থিতিতে সংসার চালানোর খরচ ছাড়াও বাবার ওষুধ কেনার টাকা রোজগারের জন্য দেড় বছর আগে থেকে বাবার পেশায় হাল ধরে প্রতিদিন রিকশাভ্যান চালাতো শম্পা। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পাওয়ায় শম্পাকে এখন আর রিকশাভ্যান চালাতে হবে না।

সহায়তা পাওয়ায় শম্পা ও তার বাবা-মা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। এতকিছু সহায়তা পেয়ে আনন্দের মুহূর্তে শম্পা ও তার বাবা-মায়ের কান্না থামাতে পারছিল না কেউ। এ সময় শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার ছোট মেয়েটার কষ্ট দূর করে দিলেন। আমাদের একটা ঘর দিলেন। আমার চিকিৎসা করাবেন। এতকিছু পামু তা কল্পনাও করি নাই। আল্লাহয় প্রধানমন্ত্রীরে মেলা দিন বাঁচায়ে রাখুক, আমি সেই দোয়াই করি।