জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেফমুবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে গড়ে তোলা হবে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞানমনস্ক সুশিক্ষিত ও দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির সব ধরনের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা থাকবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছরপূর্তি উপলক্ষে জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়ায় বঙ্গবন্ধু আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নিজ কার্যালয়ে ২০ নভেম্বর সকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
সংবাদ সম্মেলনে প্রফেসর ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জেলার মেলান্দহ উপজেলায় তারই প্রতিষ্ঠিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। ২০১৮ সালের ১৯ নভেম্বর প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। ওই বছরই ঢাকায় একটি লিয়াজোঁ অফিস স্থাপন করে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়ায় বঙ্গবন্ধু আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে অস্থায়ী ক্যাম্পাস চালু করে সেখানেই শুরু হয় প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি অনুষদের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত, ব্যবস্থাপনা ও সমাজকর্ম বিভাগে জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করছে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সদিচ্ছায় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জামালপুর জেলার সাথে সহজ ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতাধীন মেলান্দহ উপজেলার মালঞ্চ এলাকায় প্রায় ১৭ একর জমিতে স্থাপিত পূর্বের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজটিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্তীকরণ করা হয়েছে। একই সাথে কলেজটির সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যোগ্যতার ভিত্তিতে বিশ্বিদ্যালয়ে আত্তীকরণ করা হয়েছে।
উপাচার্য আরো বলেন, মেলান্দহের মূল ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার একটি ডিপিপি একনেকের সভায় পাস হলে মূল ক্যাম্পাস সংলগ্ন ৫০১ একর জমিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে। বর্তমানে মূল ক্যাম্পাসে ৫০ কক্ষবিশিষ্ট একটি অস্থায়ী একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। কলেজটির ছাত্রীনিবাসসহ আগের কয়েকটি ভবন সংস্কার করা হয়েছে। আসছে নতুন বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যেই শহরের অস্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে মেলান্দহে মূল ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে।
এছাড়াও দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ফিসারিজ কলেজকে আত্তীকরণ, বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ডিপিপি প্রণয়ন, দক্ষ শিক্ষক নিয়োগ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন, মুজিববর্ষে স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ, আধুনিক সুবিধাসহ ক্লাসরুম, করোনাকালে অনলাইনে নিয়মিত ক্লাসের ব্যবস্থা করা, সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার, পত্রপত্রিকা ও আধুনিক ল্যাব স্থাপন, অস্বচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করাসহ সকল শিক্ষার্থীদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য যাবতীয় কার্যক্রম ভালে মতো সচল রাখতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন উপাচার্য।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য ও সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান ও ফিশারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রায়হানা রহমান লতাসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জেলায় কর্মরত বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও জাতীয় দৈনিক সংবাদপত্রের সাংবাদিকরা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।