নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম
সকলের অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে জামালপুর বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি আয়োজিত এইচআইভি, এইডস বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা ডা. নজরুল ইসলাম সভাকক্ষে ১৬ নভেম্বর দুপুর ৩টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ধর্মীয় ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি, আইনজীবী ব্যবসায়ী ও শিক্ষক প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থেকে এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন জামালপুর জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন চিকিৎসক কে. এম. শফিকুজ্জামান। এতে বক্তব্য রাখেন, জামালপুর জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবু ইলিয়াস মল্লিক, সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) হাবিবুর রহমান হাবিব, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা চিকিৎসক উম্মে হানি, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার বদরুল আলম, জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক মো. খলিলুর রহমান, উন্নয়ন সংঘের পরিচালক ও মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম, জেলা জজ আদালতের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম ও আইনজীবী মো. সুজাউল ইসলাম সুজন, প্রবাহ সেবা সংস্থার সভাপতি আনজুমান আরা বেগম, প্রতিবন্ধী সেবা সংস্থার সভাপতি আমজাদ আলী, অগ্রদূত সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান, এফপিএবির মাহিনূর সিদ্দিকা প্রমুখ।
বক্তারা বন্ধু সোসাল ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির কার্যক্রম নিয়ে প্রশংসা করেন। হিজড়াসহ ঝুঁকিপূর্ণ লোকদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে, এর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন প্রয়োজন।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে, জামালপুর অপরাজেয় বাংলাদশে এর ব্যবস্থাপক মো. আশরাফুল ইসলাম, দৈনিক সচেতন কন্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশক বজলুর রহমান, বাংলা ট্রিবিউনের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ দেব, জামালপুর সিঁড়ি সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরী, দেওয়ানগঞ্জ হিজড়া মানব কল্যাণ সংস্থার সভাপতি কেয়া আক্তার মুন্নী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভা পরিচালনা করেন জামালপুর বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সাব-ডিআইসি ইনচার্জ মো. খোরশেদ আলম। তিনি বন্ধুর সকল নীতি, কার্যক্রম এবং পদ্ধতিসমূহ স্বাস্থ্যসেবার জাতীয় অগ্রাধিকার এবং এইচআইভি ও এইড্স এর জাতীয় কৌশলগত পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরেন। বাংলাদেশ সরকারের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিশেষ করে ১, ৩ এবং ৬ নম্বর গোলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বন্ধুর বিভিন্ন কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে বলেও উপস্থাপন করা হয়। দেশের ১৮টি জেলায় ৩১টি সুসজ্জিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য অধিকার এবং সামাজিক সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বন্ধু চতুর্থ কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করেছে যেখানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিশেষ করে ১, ৩, ৫, ১০, ১৬ এবং ১৭ নম্বর গোলের লক্ষ্যমাত্রা (অর্থাৎ দারিদ্র্য দূরীকরণ, সুস্বাস্থ্য অর্জন, লৈঙ্গিক সমতা, অসমতা হ্রাস, শান্তি ও ন্যায়বিচার এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব) অর্জনে অর্থপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম। বন্ধু তার নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণসহ এসডিজি’র সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্রিয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তিনি বন্ধুর ডিআইসি ও সাব-ডিআইসি ভিত্তিক সকল কার্যক্রম সম্পর্কে বর্ণনা করেন এবং বলেন, হিজড়া জনগোষ্ঠিকে ইতিমধ্যে বংলাদেশ সরকার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
জানা যায়, জামালপুরে বেনিফিশিয়ারীদের মধ্যে কোভিড-১৯ কালিন বিভিন্ন সময়ে ত্রাণ সমাগ্রী বিতরণ করা হয়। ড্রপ ইন সেন্টারে আগত এমএসএম হিজড়া জনগোষ্ঠির মধ্যে বিনামূল্যে যৌনরোগ ও সাধারণ রোগের চিকিৎসা, কাউন্সিলিং এবং স্বেচ্ছায় রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও এইচআইভি ও যৌনরোগ থেকে বাঁচার জন্য বিনামূল্যে কনডম ও লুব্রিকেন্ট বিতরণ করা হয়। এইচআইভি কিভাবে ছড়ায়/ কিভাবে ছড়ায় না এ সম্পর্কে বিষদভাবে আলোচনা করা হয়।