জামালপুর সদর হাসপাতালের জমিতে বাসাবাড়ি করে থাকছেন বাবুর্চি কিরন

জামালপুর সদর হাসপাতালের সরকারি জায়গা জবরদখল করে বাসাবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন হাসপাতালের বাবুর্চি মো. কিরন আলী। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুর সদর হাসপাতালের বাবুর্চি মো. কিরন আলী হাসপাতালের সুইপার কলোনির পাশে সরকারি জমি দখল করে ব্যক্তিগত টাকায় ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার সেই বাসায় করোনার রোগীদের খাবার রান্না করা এবং বাসার একটি কক্ষে তার ছেলের ছাত্রলীগ কার্যালয় বানিয়ে সেখানে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালায় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বাবুর্চি কিরন আলী বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণির সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি জামালপুর সদর হাসপাতাল শাখার সভাপতি। গায়ের জোড়ে সবার চোখে ধুলো দিয়ে এবং হাসপাতালের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনোরূপ তোয়াক্কা না করেই তিনি হাসপাতালের সরকারি জমিতে বাসাবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করায় বিষয়টি নিয়ে বেশ তোলপাড় চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর তাকে পর পর তিনবার নোটিশ দিয়ে বাসাবাড়ির স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য দাপ্তরিকভাবে চাপ দিলেও সেই নোটিশেরও কোন তোয়াক্কা করছেন না কিরন আলী।

বাবুর্চি কিরন আলীর ছেলে সাকিব জামালপুর শহর ছাত্রলীগের সদস্য এবং বাংলাদেশ স্কুলছাত্র কার্যনির্বাহী সংসদ কেন্দ্রিয় কমিটির নেতা। বাসার একটি কক্ষে ছেলেকে ছাত্রলীগের কার্যালয়ও করে দিয়েছেন। কিরন আলীর এসব কর্মকাণ্ড হাসপাতালে সর্বস্তরে চলছে তোলপাড়।

বাবুর্চি কিরন আলী বলেন, এর আগের সহকারী পরিচালকের কাছ থেকে মৌখিকভাবে অনুমতি নিয়ে আমার পরিত্যক্ত বাসার পাশেই নিজের টাকা খরচ করে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকার জন্য একটি টিনের ঘর তুলেছি। সরকারি জমিতে আমার বাসাবাড়ি করা ঠিক হয়নি। এখন থাকতে না দিলে তো আর জোর করে থাকা যাবে না। বাসায় করোনার রোগীদের খাবার তৈরির অভিযোগ প্রসঙ্গে কিরন আলী বলেন, আগে হাসপাতালের রান্না ঘরেই করোনার রোগীদের খাবার রান্না করা হতো। এখন হাসপাতালে করোনার রোগী কমে গেছে। তাই কিছুদিন ধরে আমার বাসা থেকেই খাবার তৈরি করে দিচ্ছি। ছেলের ছাত্রলীগের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা প্রসঙ্গে কিরন আলী বলেন, আমার ছেলে সেখানে ছাত্রলীগের অফিস করেনি। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে। তাই তার দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বাসার ওই কক্ষে মাঝে মধ্যে বসে আড্ডা দেয়, সময় কাটায়।

জামালপুর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বাবুর্চি কিরন আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে এ প্রতিবেদককে বলেন, হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরে সরকারি জমি থেকে স্থাপনা সরিয়ে ফেলার জন্য বাবুর্চি কিরন আলীকে নোটিশ করা হলেও তিনি সেখানে রয়ে গেছেন। আইন প্রয়োগ করে তাকে সরকারি জমি থেকে উচ্ছেদ করা হবে। বাবুর্চির বাসায় করোনার রোগীদের খাবার রান্না করা প্রসঙ্গে সহকারী পরিচালক বলেন, এই কাজটি তিনি করতে পারেন না। করোনা আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাধীন রোগীদের খাবার হাসপাতালের রন্ধনশালায় রান্না করা হয়। বাবুর্চি তার বাসায় রান্না করে খাবার সরবরাহ করেন, এ বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।