বন্যার ক্ষয়ক্ষতির যৌক্তিক হিসাব থাকতে হবে : ত্রাণ সচিব

বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেছেন, বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থ বরাদ্দের দিক থেকে সরকার খুবই আন্তরিক। তাই মাঠপর্যায়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতির যৌক্তিক হিসাব থাকতে হবে। যৌক্তিক হিসাব দেখিয়ে টাকা এনে সরকারের বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। কোন প্রকার নয়-ছয় যাতে না হয় সেই দিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। সারাদেশে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কড়া নির্দেশনা রয়েছে।

বন্যা পরবর্তী সরকারি পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে জামালপুর জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি ও বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে এক জরুরি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন এসব কথা বলেন। ২০ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতেই এবারের বন্যায় জামালপুর জেলার ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরা হয়। এবারের বন্যায় জামালপুর জেলার সাতটি উপজেলার ৮টি পৌরসভা ও ৫৯টি ইউনিয়নে দুই লাখ ৪৮ হাজার ৬৩৪টি পরিবারের প্রায় ১০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে রয়েছে ১২ হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমির ফসল, ১৯৪ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও ৬৬ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, নদীতীরের চারটি বাঁধ, পাঁচটি ব্রিজ-কালভার্ট, ২৬৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৬৫৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ৩৮৬টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও ১৩ হাজার ৭৩৮টি ঘরবাড়ির আংশিক, পাঁচ হাজার ৯১৪টি নলকূপ ও ছয় হাজার ৯৩৪টি ল্যাট্রিনের ক্ষতি হয়েছে। এবারের বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে ৩৮ জন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।

সভায় কৃষি বিভাগ, এলজিইডি, সড়ক ও জনপথ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা প্রকৌশল, স্বাস্থ্যবিভাগসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের জেলা পর্যায়ের প্রধান কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউএনও, রাজনৈতিক নেতা, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পরামর্শ দেন। সভার প্রধান অতিথি সচিব মো. মোহসীন বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম বাস্তবায়নে সবাইকে সঠিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে প্রাপ্ত বরাদ্দের অর্থকে জনকল্যাণে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর তাগিদ দেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (ত্রাণ) মো. আনিছুর রহমান, গ্রামীণ সড়ক এইচবিবিকরণ দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্প পরিচালক দীপক রঞ্জন অধিকারী, পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, জামালপুর পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মনি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী, ইসলামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুন নাসের খান বাবুল, মাদারগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান বেলাল, মেলান্দহ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান, দেওয়ানগঞ্জের ইউএনও সুলাতানা রাজিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, উন্নয়ন সংঘের প্রকল্প পরিচালক (মানবসম্পদ) ও বাংলারচিঠিডটকম সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিম, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ জলিল প্রমুখ।