ইসলামপুরের বন্যাদুর্গত চরে ভালোবাসি জামালপুরের ত্রাণ বিতরণ

জামালপুরের তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভালোবাসি জামালপুরের সদস্যরা ইসলামপুরের চরে পানিবন্দি বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করে। ছবি : বাংলারচিঠিডটকম

নিজস্ব প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভালোবাসি জামালপুর’। ২৯ জুলাই উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামের পানিবন্দি মানুষের হাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর প্যাকেট তুলে দেয় সংগঠনের সদস্যরা। গ্রামগুলো হলো চর নন্দনের পাড়া, পূর্ব বামনা, গুঠাইল, শিংভাংগা, বীর চন্দনের পাড়া।

ভালোবাসি জামালপুরের প্রতিষ্ঠাতা সজীব মিয়া বলেন, ত্রাণ হিসেবে একটি পরিবারের একসপ্তাহ চলার মতো চাল, ডাল, তেল, আলু, চিড়া, লবণ, সাবান ও ওরস্যালাইন দেওয়া হয়। সংগঠনের পক্ষে সংগৃহীত ব্যক্তি অনুদান থেকে ৩০০ জন মানুষের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেবে ভালোবাসি জামালপুর। প্রথম দফায় ইসলামপুরে ১৫০ জন বন্যাদুর্গত মানুষকে এই সহায়তা তুলে দেওয়া হলো।

চিনাডুলী ইউনিয়নটি উপজেলার অন্য এলাকা থেকে একেবারে বিছিন্ন। মূল ভূখণ্ড থেকে যমুনার চরটিতে নৌযানে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় একঘণ্টা। এলাকা মাঠ ও ঘরবাড়িতে বুকপানি। গবাদিপশু আর আশ্রয়হীন মানুষগুলো উঁচু কোনো জায়গায় কষ্টে দিন পার করছে। অনেকের দিন কাটছে অর্ধাহারে–অনাহারে।

ইউনিয়নটির অন্য গ্রামে কিছু ত্রাণ পৌঁছালেও চর নন্দনের পাড়া গ্রামে আগে পৌঁছায়নি। এই গ্রামের মানুষের জন্যই ভালোবাসি জামালপুরের ত্রাণ তৎপরতা।

জামালপুরের তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভালোবাসি জামালপুরের ত্রাণ পেয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছেন একজন বয়স্ক বানভাসি।ছবি : কাংলারচিঠিডটকম

ত্রাণ পেয়ে পূর্ব বামনা গ্রামের জোবেদা বেগম (৫০) আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আইজ পেটভরি কয়ডা ভাত খাইতে পারমু।’ এই নারী এক মাসের বেশি সময় ধরে পানিবন্দি। অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। জনপ্রনিধিদের কাছে চেয়েও ত্রাণ সহায়তা পাননি। ভালোবাসি জামালপুরের ত্রাণ পাওয়ায় কয়েকটা দিন খাবার নিয়ে ভাবতে হবে না।

চর নন্দনের পাড়ার দিনমজুর শামসু আলী (৩৮) বলেন, দিন আনি দিন খাই, ভাই। বানের পানি আসার পর এলাকায় কোনো কাজ নাই, কেউ ত্রাণও দেই নাই।

ভালোবাসি জামালপুরের প্রতিষ্ঠাতা সজিব মিয়া আরও বলেন, ত্রাণের আরেক অংশ দেওয়ানগঞ্জের দুর্গত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে। আমাদের এই উদ্যোগে ক্যাডেট কলেজ ইনটেক ২০১০ ব্যাচ, ইউটিউবার ইয়েলো পটেটো ও কিটো ভাই এবং মাস্তুল ফাউন্ডেশনসহ ব্যক্তিগতভাবে যারা সহায়তা করেছেন ভালোবাসি জামালপুর তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

উল্লেখ্য, জেলার তরুণদের সংগঠন ‘ভালোবাসি জামালপুর’। মুক্তিযুদ্ধ গবেষণাসসহ নানা সামাজিক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সংগঠনটি। ইতিমধ্যে জাতীয়ভাবেও এসব কাজের স্বীকৃতি মিলেছে। এর মধ্যে ইয়াং বাংলার ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ২০১৮’ অন্যতম।

sarkar furniture Ad
Green House Ad