জামালপুরে মা ও শিশু সন্তানসহ করোনায় আক্রান্ত আরও ৪ জন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম

গত ২৪ ঘন্টায় জামালপুর জেলায় তিন বছরের শিশু ও তার মাসহ নতুন করে আরো চারজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। জামালপুর ও ময়মনসিংহ পিসিআর ল্যাব থেকে ১৫ মে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে তাদের করোনা পজিটিভ আসে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন ১১৫ জন। জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৫ মে ৫৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র এক যুককের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। তার বাড়ি জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায়। দেওয়ানগঞ্জের ইউএইচএফপিও চিকিৎসক সৈয়দ আবু আহাম্মদ শাফী এ প্রতিবেদককে জানান, এ উপজেলায় নতুন আক্রান্ত যুবকের বাড়ি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব কলাকান্দা গ্রামে। তার বয়স ২২ বছর। এর আগে ১২ মে তার প্রতিবেশী করোনায় আক্রান্ত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার কারণে ১৩ মে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ১৫ মে তার করোনা পজিটিভ নিশ্চিত হওয়ার পর বাড়ি থেকে এনে তাকে জামালপুরে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। একই সাথে তার বাড়িটিও লকডাউন করা হয়েছে।

এছাড়া ময়মনসিংহ পিসিআর ল্যাব থেকে আসা নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে জেলায় আরও তিনজনের নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। তাদের মধ্যে মাদারগঞ্জ উপজেলার একজন নারী এবং ইসলামপুর উপজেলায় তিন বছরের ছেলেশিশু ও তার মা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই শিশুটিই জেলায় প্রথম সবচেয়ে কম বয়সের করোনায় আক্রান্ত রোগী।

মাদারগঞ্জের ইউএইচএফপিও চিকিৎসক মো. সাইফুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, এ উপজেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন গুনারিতলা ইউনিয়নের কাতলামারী গ্রামের ১৯ বছর বয়সের একজন গৃহিনী। তাকে জামালপুরে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি এবং তার বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।

অপরদিকে ইসলামপুরের ইউএইচএফপিও চিকিৎসক এ এ এম আবু তাহের এ প্রতিবেদককে জানান, এ উপজেলায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ বছর বয়সের এক নারী এবং তার তিন বছর বয়সের ছেলে। তাদের বাড়ি উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়নের সভুকুড়া গ্রামে। ১০ মে নমুনা সংগ্রহ করার দুয়েকদিন আগে তার স্বামী-সন্তানকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। এই দম্পতি নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানার কর্মী। ১৫ মে মা ও ছেলের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসার পর তাদের বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে মা ও ছেলেকে রাতেই ওই গ্রাম থেকে এনে জামালপুরে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।

জামালপুরের সিভিল সার্জন চিকিৎসক প্রণয় কান্তি দাস এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এ জেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত একজন নারী ও তার তিন বছরের শিশুসহ চারজনকেই জামালপুরের প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। আমি জেনেছি এই চারজনের করোনা উপসর্গ তেমন জটিল নয়। তবে জেলায় সবচে কম বয়সের এই শিশুটির বিষয়ে ১৬ মে শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে ভালো মতো তার শারীরিক পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া তিনটি উপজেলায় নতুন আক্রান্ত চারজন করোনার রোগীদের বাড়ি ইতিমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে নমুনা সংগ্রহ করাসহ ওইসব এলাকায় করোনা সংক্রমণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত ১১৫ জন করোনার রোগী শনাক্ত হলো বলেও তিনি জানান।