সুজন সেন, নিজস্ব প্রতিবেদক, শেরপুর
বাংলারচিঠিডটকম
কিসের এক ভাইরাস আইছে, একেবারে ব্যবসাটা গায়েব কইরে দিছে। এ ভাইরাসের নাম হুনার পর থ্যাকাই আর লোকজন আহে না পর্যটন কেন্দ্রে। কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মধুটিলা ইকোপার্কের ভ্রাম্যমাণ ডাব বিক্রেতা হাফিজ উদ্দিন। মূলত করোনাভাইরাস আতঙ্কে শেরপুরের পর্যটন ক্ষেত্রে ধস নেমেছে। আর এর জেরেই ভারত সীমান্ত ঘেঁষা জেলার তিনটি উপজেলার নয়নাভিরাম পর্যটন স্পটগুলো এখন জনশূন্য। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় সূত্র, ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যটকে মুখরিত থাকে জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর পর্যটন কেন্দ্রগুলো। হঠাৎ দেশে করোনাভাইরাস আতঙ্ক দেখা দেয়ায় গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র, রাজার পাহাড়, পানিহাটি তাড়ানি ও মধুটিলা ইকোপার্ক এখন পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে।
গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রের বাহারী জিনিস বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এখানে পর্যটক আসছে না। করোনাভাইরাস আতঙ্কে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন শতশত গাড়িতে করে হাজারো পর্যটক এখানে ভীড় করতো। যার বেশিরভাগ পর্যটক হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। তাই এখন পর্যটক নেই বললেই চলে, আমরা অলস সময় পার করছি।
রাজার পাহাড় পর্যটন কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ পানি বিক্রেতা কমলা, হালিমা ও ফুলেছা বেগম বলেন, এ পর্যটন কেন্দ্রে তারা তিন-চার মাস এখানে পানি বিক্রির আয়ের টাকায় সংসার চালান। কিন্তু পর্যটক না থাকায় তাদের রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে ।
গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্রের ‘গারো মা ভিলেজ’ নামক বিনোদন স্পটের ব্যবস্থাপক আতিক বলেন, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পর্যটকের আনাগোনা নেই। ব্যবসা খুবই খারাপ।
গজনী পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারের ইজারাদার হান্নান বলেন, এ বছর মৌসুমের শুরুতে দর্শনার্থী দেখে মনে হয়েছিল ব্যবসা এবার ভালো হবে। বর্তমানে এই করোনাভাইরাস আতঙ্কে পর্যটন কেন্দ্র এখন একেবারেই দর্শনার্থী শূন্য। এ কারণে অনেক টাকা লোকসান গুণতে হবে।
করোনা আতঙ্কে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের পদচারণা নেই বলে জানিয়েছেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ।