বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের স্কুল-কলেজ বন্ধের মত পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘স্কুল-কলেজ স্বাভাবিকভাবে চলবে। আপাতত স্কুল বন্ধ হবে না। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হবে। এ ভাইরাস নিয়ে মানুষ যতটা আতঙ্কিত, আসলে বিষয়টা এতো আতঙ্কের নয়। তবে এই ভাইরাস নিয়ে রিউমার যেন না ছড়ায়, এজন্য আমাদের যত্নশীল হতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৯ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ কথা জানান।
জাহিদ মালেক বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে স্কুলে হ্যান্ড সানিটাইজার ব্যবস্থা করা হোক। এই মেসেজটা শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারের কাছেও নিয়ে যাবে। এখনকার জন্য এই নির্দেশনা, পরে অন্য নির্দেশনা এলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তা জানাবে, আমরা সাহায্য করব।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে আমরা জানুয়ারি মাস থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি। এয়ারপোর্টে নতুন করে ২টি স্ক্যানার বসানো হয়েছে। এই নিয়ে ৬টি স্ক্যানার বসানো হয়েছে এয়ারপোর্টে। তিনটি কমিটি করেছি, জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে। আমরা আশঙ্কায় ছিলাম যেকোনো সময় আমরা আক্রান্ত হতে পারি। রোববার রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।
বিদেশ থেকে যারা আসছেন তাদের উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, প্রয়োজন ছাড়া দেশে আসবেন না আপনারা। যদি আসতেই হয় তাহলে এসে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমাদের মেডিকেল টিম গিয়ে আপনাকে পরীক্ষা করবে।
তিনি বলেন, বিদেশফেরত বিশেষ করে করোনাভাইরাসে বেশি আক্রান্ত ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো থেকে আসা বাংলাদেশিদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তাদের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজন হলে কোয়ারেন্টাইনে (সংক্রমণরোধে আলাদাভাবে) রাখার ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ঢাকায় ৪০০ বেড প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ডাক্তার ও নার্সদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। প্রটেক্টিভ গ্লাফস জাতীয় জিনিসগুলো বড় আকারে মজুদ করা হবে। ইতালি, কোরিয়া থেকে আসা মানুষদের আলাদা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
মাস্ক এবং অন্যান্য জিনিসের দাম যাতে, না বাড়ে সে বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস সচেতনতামূলক পোস্টার, ব্যানার সারাদেশে বিতরন করা হবে। জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান সীমিত আকারে করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো যেন পরিহার কিংবা সীমিত পরিসরে করা হয়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২১ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কেবল চীন ফেরত যাত্রীদের স্ক্রীনিং করা হলেও ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বর্তমান পর্যন্ত সকল বিদেশ ফেরত যাত্রীদেরকেই ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে স্ক্রীনিং করা হচ্ছে। যাত্রীদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পরিবহনেও কর্মরত সকলেরই স্ক্রীনিং করা হচ্ছে। ২১ জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত ৫ লাখেরও বেশি বিদেশ ফেরত যাত্রীকে স্ক্রীনিং করা হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সন্দেহজনক মোট ১২০ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে ৩ জনকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে। তারা বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বর্তমানে আক্রান্ত একজনের সাথে সংশ্লিষ্ট ৪৮ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন অবস্থায় রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে আছে একজন। দুইজন ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। কেভিড-১৯ সংক্রান্ত আমাদের স্বাস্থ্যখাতের হট লাইনগুলোতে এ যাবৎ ৪ হাজার ৯৩২টি কল এসেছে।সূত্র:বাসস।