লিয়াকত হোসাইন লায়ন, ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের কেবিনের কামরায় প্রাক্তন এক ছাত্রীর সাথে অসামাজিক কার্যকলাপের ঘটনার প্রতিবাদে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার জে জে কে এম গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুছ ছালাম চৌধুরীর অপসারণের দাবিতে ১০ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দ।
১০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের আয়োজনে ওই কলেজটির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই কলেজটির জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক সামছুল আলম।
জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক সামছুল আলম অভিযোগ করে বলেন, আন্তঃনগর তিস্তা ট্রেনের কেবিনের কামরায় নিজ কলেজের প্রাক্তন এক ছাত্রীর সাথে অসামাজিক কার্যকলাপের ঘটনাসহ আব্দুছ ছালাম চৌধুরীর নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত থাকায় আজ উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছেন। অধ্যক্ষ নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি অর্থ আত্মসাতের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন এবং শুরু করেন নিয়োগবাণিজ্য। এ পর্যন্ত তিনি ১৭ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পারিবারিকভাবে অর্থ বৈভবের মালিক না হয়েও প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাত করে জামালপুর শহরে একটি ফ্ল্যাট বাড়ি ও একটি দামি নোহা গাড়ি কিনে ব্যবহার করে আসছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সচেতন এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে জেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পথসভায় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আখন্দ, অধ্যক্ষ মোস্তফা কামাল, সামছুল আলম, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহানারা পারভিন পুথি, উপজেলা যুব মহিলালীগের সভাপতি আবিদা সুলতানা যুথি, শিক্ষক নাহিদা আক্তার খানম সুলেখা, খলিলুর রহমান, হাজি ফুল মাহমুদ লক্ষিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাব হোসেন, ডিগ্রিরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম মো. রুহুল আমীনসহ উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা অধ্যক্ষ আব্দুছ ছালাম চৌধুরীকে ইসলামপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে শিক্ষকরা ওই অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি দেন।
প্রসঙ্গত, ২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জামালপুর থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী আন্ত:নগর তিস্তা ট্রেনের বেশ কয়েকজন যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রেনটির কেবিনের একটি কামরায় অধ্যক্ষ আব্দুছ ছালাম চৌধুরী ও একই কলেজের প্রাক্তন এক ছাত্রীকে অসামাজিক কার্যকলাপরত অবস্থায় হাতেনাতে আটক করে রেলওয়ে পুলিশ। পরে গভীর রাতে রহস্যজনক কারণে জামালপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ অধ্যক্ষ ও ছাত্রীকে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে ওই অধ্যক্ষের চাকরি থেকে অপসারণসহ তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ইসলামপুরে বেশ তোলপাড় চলছে। গোটা ইসলামপুরবাসী অধ্যক্ষ আব্দুছ ছালাম চৌধুরীকে সামাজিকভাবে বয়কট করে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।