জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
অবশেষে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিসারিজ কলেজের শিক্ষার্থীদের একই ক্যাম্পাসে স্থাপিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদে আত্তীকরণ করা হয়েছে। কলেজটির শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবিই জানিয়ে আসছিল। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির আওতায় তাদের প্রথম ক্লাসও শুরু হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদেরকে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের অনুমোদন পাওয়ার পরই ফিসারিজ কলেজের বিগত চারটি শিক্ষা বর্ষের ২৫৭ জন শিক্ষার্থীদের ক্লাশ শুরুর অনুমতি দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ শামসুদ্দিন আহমেদ। ৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তিনি ক্লাস পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করার নির্দেশও দিয়েছেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। মুজিববর্ষ উপলক্ষে উপাচার্য অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাছের চারা রোপণ করেন।
জানা গেছে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম তার নির্বাচনী এলাকা জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার মালঞ্চ গ্রামে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিশারিজ কলেজ। সরকার ২০১৭ সালের ২৫ মে কলেজটিকে একটি বিশেষায়িত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের নীতিগত সম্মতিতে একই বছরের ২০ নভেম্বর ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে বিল আকারে জাতীয় সংসদে পাস হয়। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের আগেই জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়ায় বঙ্গবন্ধু আইডিয়াল স্কুল এ- কলেজে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষা বর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়।
ফিসারিজ কলেজটিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের কারণে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষার্থীরা। তাদেরকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্তীকরণ করার দাবিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। অবশেষে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবনের সুবিধা বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদ খোলার অনুমোদন পেয়েছে। এ নিয়ে ফিসারিজ কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশ আশার আলো দেখতে পাচ্ছে।
ফিসারিজ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এস এম আল ফাহাদ বলেন, ‘আমাদেরকে এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়ায় অনেক ভালো হলো। আমরা খুবই দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম। আমাদের সবার হতাশা দূর হয়ে গেছে। এখন থেকে এই ক্যাম্পাসেই ক্লাস ও পরীক্ষা হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই সনদ অর্জন করবো। আমাদের ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর পরীক্ষা দিতে যেতে হবে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়টির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ বাংলারচিঠিডটকমকে জানান, নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রথমবারের মতো ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, গণিত ও কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং, বাণিজ্য ও সামাজিক অনুষদে স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষে ১৩৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তির মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু হয়। চলতি ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে খোলা হয়েছে ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ। চলতি শিক্ষাবর্ষে মোট পাঁচটি অনুষদে স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষে ভর্তি হয়েছে ১৬৭ জন শিক্ষার্থী।
তিনি আরো জানান, এখানে মাৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের অনুমোদনের প্রেক্ষিতেই চলতি শিক্ষা বর্ষের ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিসারিজ কলেজের বিগত চারটি শিক্ষাবর্ষের ২৫৭ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদেরকে আত্তীকরণের প্রক্রিয়ারও সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। তবে ফিসারিজ কলেজটির শিক্ষক-কর্মচারীদের আত্তীকরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।