সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যৌতুকের দাবিতে চায়না বেগম নামে এক গৃহবধূকে ঘরে আটকে রেখে র্নিযাতন চালিয়েছে পাষন্ড স্বামী সুলতান আহম্মেদ। উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বাশঁবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে ২৫ জানুয়ারি সকালে গৃহবধূর বাবা চাঁন মিয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত মেয়েকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ চায়না বেগম জানান, তিন বছর পূর্বে একই গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে সুলতান আহম্মেদের সাথে মহাদান ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী গ্রামের চান মিয়ার মেয়ে চায়না বেগমের সামাজিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর স্ত্রী চায়না বেগমের কাছে এক লক্ষ্য টাকা যৌতুক দাবি করে। পরে গৃহবধূ চায়না বেগম তার বাবা চান মিয়ার কাছ থেকে এক লক্ষ্য টাকার দাবি পূরণ করে। দাবি পূরণ হওয়ার পর যৌতুক লোভী স্বামী সুলতান আহম্মেদ ফের গৃহবধূকে আরও টাকার জন্য দাবি জানাতে থাকে। আরো টাকা দিতে স্ত্রী চায়না বেগম অপারগতা জানায় স্বামীকে। এ নিয়ে স্বামীর স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে র্নিযাতন চলতে থাকে গৃহবধূর উপর। অমানুষিক নির্যতনের ঘটনায় ২০১৯ সালে নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে জামালপুর আদালতে চায়না বেগম বাদী হয়ে স্বামী সুলতাল আহম্মেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
স্ত্রীর করা মামলায় সুলতান আহম্মেদ গ্রেপ্তার হয়ে দুই সপ্তাহ কারাভোগ করেন। এর পর স্ত্রীকে নিয়ে পূনরায় ঘর সংসার করার শর্তে আদালত চলতি মাসের ৮ জানুয়ারী মীমাংসার আদেশ দেন। জামালপুর আদালত থেকে স্ত্রী চায়না বেগমকে নিয়ে সুলতান আহম্মেদ নিজের বাড়ীতে যান। হঠাৎ গত শুক্রবার সকাল থেকে চায়না বেগমকে বসত ঘরের একটি কক্ষে আটকে রেখে র্নিযাতন চালায় সুলতান আহম্মেদ। নির্যাতন চালিয়ে সিগারেটের আগুন দিয়ে ছেঁকা, হাত-পা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে কেটে খত করা ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে গৃহবধূকে। এ ঘটনায় ২৫ জানুয়ারি সকালে গৃহবধূর বাবা চান মিয়া সংবাদ পেয়ে এলাকার লোকজনের সহায়তায় ঘটনাস্থলে গিয়ে তালাবদ্ধ একটি কক্ষ থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে এবং সরিষাবড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গৃহবধূর বাবা চান মিয়া জানান, ২৫ জানুয়ারি সকালে মেয়ের নির্যতনের সংবাদ পেয়ে সুলতানের বাড়ী যাই । আমার উপস্থিত দেখে আমাকে গালাগালি করতে থাকে এবং হুমকী দেয়। পরে এলাকাবাসীদের নিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেয়ের চিকিৎসা চলছে । কিছুটা সুস্থ্য হলেই থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
সরিষাবাড়ী থানার ভার প্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান জানান, মহাদান ইউনিয়নে একজন গৃহবধূকে নির্যতানের বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।