বাংলারচিঠিডটকম ডেস্ক : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিশ্বে বিরল। দুই দেশের ছিটমহল বিনিময় থেকেই তা দেখা যায়। এত শান্তিপূর্ণভাবে এই ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হয়েছে, যা বিশাল এক অর্জন। বিশ্বে বিরল নজির।
তিনি ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর রেডিসন হোটেলে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে ভারতের আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক উন্নয়নে এক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে ভারতের আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক উন্নয়নে দুই দেশের অংশীদারদের মধ্যে আজ ত্রিপক্ষীয় একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম ধাপে ৪৪ কোটি টাকা ও দ্বিতীয় ধাপের জন্য ৫৫ কোটি টাকাসহ ৯৯ কোটি টাকা প্রকল্প কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে।
মহাসড়কটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের এফকন ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স লিমিটেড, বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং অর্থ ঋণ দেয়া প্রতিষ্ঠান এক্সিম ব্যাংকের ভারত শাখার মধ্যে এই ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশের উপস্থিতিতে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা চুক্তিপত্রে সই করেন।
উভয় দেশের মধ্যে আরও কিছু সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেগুলো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা হবে। সমস্যার সমাধানে আমরা দুই পক্ষই কাজ করছি।
তিনি বলেন, দু’দেশের দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বোঝাপড়া খুব ভালো। এতে সমস্যা সমাধানের পথ সুগম হয়। আজ যে কাজের চুক্তি হলো তার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ আরও উন্নত হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী জানান, দুইটি ধাপের কাজের উদ্বোধন হয়েছে। যারা এই কাজটি করছে তাদের বেশ সুনাম রয়েছে। আশা করি, তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গুণগতমান ঠিক রেখে কাজটি সম্পন্ন করবেন।
এ সময় রীভা গাঙ্গুলি দাশ বলেন, ‘ভারতের বহির্বিশ্বের সঙ্গে উন্নয়ন কার্যক্রমের সর্বাধিক বাংলাদেশের সঙ্গে। প্রায় ৪৬টি প্রকল্প আমরা দু’দেশ মিলে বাস্তবায়ন করছি। এর মধ্যে সর্বাধিক প্রকল্প আছে রেলওয়ে নিয়ে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার। ভারত প্রতিবেশী এবং বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের এই লক্ষ্য অর্জনে সবসময় পাশে থাকবে। এই সড়ক নির্মাণ চুক্তি সই পাশে থাকারই এক নজির।
জানা যায়, প্রথম ধাপে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সরাইল পর্যন্ত ১২ দশমিক ২১ কিলোমিটার সড়ক নির্মিত হবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫৫ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা। আর রক্ষণাবেক্ষণখাতে ব্যয় ধরা হয়েছে আরও ১৯ দশমিক ১ কোটি টাকা।
অন্যদিকে, দ্বিতীয় ধাপে দারকার থেকে সরাইল পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এই অংশে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আর পুরো প্রকল্পটির পরামর্শক বিষয়ক খাতে পাঁচ বছরে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৭ দশমিক ৬৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ দারকার থেকে আখাউড়া পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করা হবে।
‘চার লেন বিশিষ্ট আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-দারকার-আখাউড়া স্থলবন্দর সড়ক উন্নীতকরণে জাতীয় মহাসড়ক’ শীর্ষক এ প্রকল্পে দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের অর্থ ঋণ দেবে এক্সিম ব্যাংকের ভারত শাখা।
অনুষ্ঠানে উভয় দেশের সরকারি-বেসরকারি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।সূত্র:বাসস।