জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে জামালপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ। ৭ জানুয়ারি বিকেলে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক নতুন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার নানা দিক তুলে ধরেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক সাংবাদিকদের জানান, জামালপুর শহরের বকুলতলায় মিনিস্ট্রিয়াল কর্মচারী সমিতির কার্যালয়ের প্রায় ২২ শতাংশ জমিতে জামালপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ নামে ভালোমানের একটি নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান অবকাঠামোতেই চলতি শিক্ষা বছর থেকেই এই বিদ্যালয়ে তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করে পাঠদান শুরু করা হবে চলতি মাসেই।
তিনি বলেন, আসছে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভর্তির আবেদন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে। ১৭ জানুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতি শ্রেণিতে ৪০ জন করে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হবে। ভর্তির ক্ষেত্রে মেধাক্রম অনুসরণ করা হবে, কোনোরূপ তদবির বা চাপপ্রয়োগ করে এখানে ভর্তির কোনো সুযোগ থাকবে না। এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে তৃতীয় শ্রেণিতে ৪০০ টাকা, চতুর্থ শ্রেণিতে ৫০০ টাকা, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৭০০ টাকা এবং সপ্তম শ্রেণিতে ৮০০ টাকা করে প্রতিমাসে বেতন বা ফি দিতে হবে। মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমিক নম্বর ১ থেকে ১০ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনাবেতনে পড়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তৈরি করা হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানের একটি পরিচিতি চিহ্ন বা লোগো। কড়া নিয়ম-শৃংখলার মধ্য দিয়ে অনেকটা ক্যাডেট কলেজের শৃংখলা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও সহপাঠক্রমিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। থাকবে মাল্টিমিডিয়া পাঠদানের ব্যবস্থা। জামালপুরে একটি মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এরজন্য যা যা করা দরকার তার সবকিছুর ব্যবস্থাপনা এই প্রতিষ্ঠানে থাকবে।
তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য বিশেষ পাঠ্যসূচি তৈরি করা হবে, যাতে বছর শেষ হওয়ার অনেক আগেই তাদের পুরো পাঠ্যসূচির পাঠদান সম্পন্ন ও পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করে ওপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারে। তিনি বেশ জোর দিয়ে বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে বাড়িতে গৃহশিক্ষক বা কোনো কোচিং কেন্দ্রে প্রাইভেট পড়তে হবে না।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে যাতে কোনোরূপ বাণিজ্যিকীকরণ না হয় সেই দিকে আমাদের খুব নজর থাকবে। একজন প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী হাকিম একজন প্রশাসক হিসেবে সার্বিক কার্যক্রমের ওপর নজর রাখবেন। কিভাবে সকলের আস্থা অর্জনের মধ্যদিয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করা যাবে তা নিয়েই আমাদের সকল পরিকল্পনা গৃহিত হচ্ছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আস্থার সাথে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে জামালপুরের সর্বস্তরের সাংবাদিকদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক ছাড়াও জামালপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা হাকিম (এডিএম) মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ কবীর উদ্দিন, জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা এই ধরনের নতুন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা পথে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।