জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বাংলারচিঠিডটকম
জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ও মিশন অনুযায়ী দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতিমুক্ত দেশ চলবে। এবার পরীক্ষামূলকভাবে ১৬ জেলায় অ্যাপসের মাধ্যমে ধান কেনা হচ্ছে। কৃষকরা এক হাজার ৪০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করতে পারছে। আগামীদিনে হয়তো সারা দেশে এই ডিজিটাল পদ্ধতিতেই কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করা হবে। ধানের ন্যায্যমূল্য যাতে কৃষক পায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন।’
২ জানুয়ারি সকালে জামালপুর সিংহজানী খাদ্য গুদামে জামালপুর সদর উপজেলায় অ্যাপসের মাধ্যমে লটারিতে বিজয়ী প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেন এসব কথা বলেন। জেলা খাদ্য বিভাগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, ‘ন্যায্যমূল্যে ধান ক্রয় নিয়ে বিগত দিনে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে যাতে ধান ক্রয়ে কোনো প্রকার দুর্নীতি না হয়, স্বজনপ্রীতি না হয় সেজন্যই এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে কৃষক বাছাই করা হয়েছে। আমি এমপি হলেও আমিও তো একজন কৃষক। কিন্তু লটারিতে আমার নাম ওঠে নাই। এতেই বোঝা যায় যে কৃষক তালিকা নিয়ে এবার কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি হয় নাই।’ তিনি এই ধান ক্রয় নিয়ে যাতে কোনো প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।
খাদ্য বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে অ্যাপসের মাধ্যমে কৃষক বাছাই তালিকায় ১৬ জেলার মধ্যে এবার জামালপুর সদর উপজেলা রয়েছে। সদর উপজেলায় অ্যাপসের মাধ্যমে ধান বিক্রির আবেদন করা ২৬ হাজার ২৯৫ জন কৃষকের মধ্য থেকে অনলাইনে স্বয়ংক্রিয় লটারি প্রক্রিয়ায় ২ হাজার ৫৯১ জন কৃষককে নির্বাচিত করা হয়। তাদের কাছ থেকে এবার ৩ হাজার ৩৫৯ মেট্টিক টন ধান ক্রয় করা হবে।
প্রথম ধান ক্রয় করা হয় জামালপুর সদরের কেন্দুয়া ইউনিয়নের কুটামনি এলাকার কৃষক মো. ওয়াজেদ আলীর কাছ থেকে। কৃষক ওয়াজেদ আলী এক হাজার ৪০ টাকা মণ দরে সরকারের কাছ ধান বিক্রি করতে পেরে খুব খুশি হয়েছেন। মাঝারি কৃষক তালিকায় তিনি এক হাজার ৬০০ কেজি ধান বিক্রি করছেন। এর আগে কোনোদিন কৃষক তালিকায় তার নাম উঠেনি। খাদ্যগুদামেও আসেননি কোনো দিন। কৃষক ওয়াজেদ আলী বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। জীবনে এই পরথম ১ হাজার ৪০ টাকা মণ দরে ধান বেচলাম। আমি খুব খুশি। গুদামে ধান না দিবার পাইলে এই ধান সর্বোচ্চ ৫৭০ টাকা মণে বিক্রি করতে হইতো। গুদামে আরো ধান দিবার পাইলে ভালোই হইতো। আমি এইবার ৮৫ মণ ধান আবাদ করছি। যেটুক নিলো তারা এতে আমার আবাদ খরচটা উইঠা আইলো।’
লটারিতে বিজয়ী একই এলাকার আরেকজন কৃষক মো. শাহাজান আলীও প্রথম গুদামে ধান বিক্রি করলেন। তিনি বললেন, ‘আমি এবার ৬০ মণ ধান আবাদ করছি। তার মধ্যে ৪০ মণ গুদামে বেচলাম। বাজারে ধান বেইচা মেলা লস হয়। সরকার এইভাবে আমগরে কাছ থেইকা ধান কিনলে খরচ পোষাইতো।’
ধান ক্রয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হোসেন। এ সময় জামালপুর সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস আহমেদ, সিংহজানী খাদ্য গুদামের সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত ইকরাম, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা, সহ-সভাপতি দুলাল হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।