মুক্তিযোদ্ধা সংসদে সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী সিরাজুল তোপের মুখে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, জামালপুর
বাংলারচিঠি ডটকম

জামালপুরে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনা সভায় ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলায় তোপের মুখে পড়েন বিএনপিনেতা ও সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী মো. সিরাজুল হক। বিক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা তার ওপর চড়াও হতে গেলে পরিস্থিতি শামাল দেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। ২৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জামালপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে এ ঘটনা ঘটে। মুক্তিযোদ্ধারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বেলা ১২টার দিকে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর। অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম হীরা, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানাসহ জেলার মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপিনেতা ও সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী মো. সিরাজুল হক তার বক্তব্যে বাংলাদেশ জিন্দাবাদের যৌক্তিকতা, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরিসহ জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করে ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ বলে বক্তব্য শেষ করা মাত্রই মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগনেতারা উচ্চস্বরে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে তার ওপর চড়াও হতে যান। এ সময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর মুক্তিযোদ্ধাদের শামাল দেন। পরে পুনরায় অনুষ্ঠান শুরু হয়।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সুজাত আলী ফকির এ প্রসঙ্গে বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘সিরাজুল হকরা জয়বাংলা বলেই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। আজকে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠানে জয়বাংলা না বলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলা মোটেই সমীচিন হয়নি তার। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমানের শাসনামল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশে জয়বাংলা স্লোগান ধরতে পারেনি। আজকে জিয়াউর রহমানের অনুসারীরাই বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করতে চায়। আমরা সিরাজুল হকের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

এ প্রসঙ্গে সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা মো. সিরাজুল হক বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘আমি কেন ‘জয়বাংলা’ না বলে কেন আমি বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বললাম এ নিয়ে আওয়ামীপন্থী মুক্তিযোদ্ধারা আমার ওপর ক্ষীপ্ত হয়ে হট্টগোল করে। আসলে তারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে স্বীকার করতে চান না বলেই হয়তো তাদের আঁতে ঘা লাগে।’

জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর এ প্রসঙ্গে বাংলারচিঠি ডটকমকে বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে উনার (সিরাজুল হকের) এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করা ঠিক হয়নি।