ড্রেন খননের কাজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি

সওজ’র নির্মাণাধীন ড্রেন। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

মাহমুদুল হাসান মুক্তা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাংলারচিঠিডটকম

চলতি বর্ষা মৌসুমে জামালপুর শহরের নতুন বাইপাস সড়কের একপাশে শুরু হয়েছে ড্রেন খননের কাজ। এতে সড়কের উত্তরপাশে অবস্থিত দোকানপাট, হোটেল, ওয়ার্কশপসহ নানা প্রতিষ্ঠানে ভাটা পড়েছে ব্যবসায়িক কাজকর্ম। অপরিকল্পিতভাবে এই ড্রেন খননের কারণে বিরাট আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এমনই অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। তবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সওজের দাবি পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে জরুরি ভিত্তিতে ওই সড়কের পাশে চলছে ড্রেন খননকাজ। এতে কোন দোকানমালিকের জমি পড়েনি।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৩ জুলাই বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়ক ও জনপথের খননযন্ত্র দিয়ে খোঁড়া হচ্ছে ড্রেনপথ। প্রতিটি দোকান থেকে প্রায় ২/৩ ফুট দূর দিয়ে চলছে এই খননকাজ। খননের সময় ধসে পড়ছে আশেপাশের মাটি। খননকৃত মাটি রাখা হয়েছে সড়কের পাশেই। জলকাদায় মাখামাখি ওই জায়গাটুকু। দোকানপাট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে এই কাদাজল মাড়িয়ে যেতে হয়। এছাড়া কাঁচা ড্রেনের দুপাশে ইটের গাঁথুনি দিয়ে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। স্ল্যাব দেওয়া হয়নি। সেজন্য সড়কের এইপাশের দোকানপাট এড়িয়ে যাচ্ছে খরিদ্দাররা।

সওজের যেসব কর্মকর্তা এই ড্রেন নির্মাণে তদারকি করছেন তাদের ভাষ্য অনুয়ায়ী, আগামী ডিসেম্বর মাসে স্থায়ীভাবে এই ড্রেন নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সওজ। এখন পানি নিষ্কাশনের জন্য অস্থায়ীভাবে করা হচ্ছে ড্রেন নির্মাণ।

এ বিষয়ে জামালপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এনামুল হক মিলন বলেন, ড্রেন নির্মাণকাজে একদিকে ব্যবসায়ীরা যেমন আনন্দিত অন্যদিকে আতঙ্কিত। কারণ কাঁচা ড্রেন এ অবস্থায় রাখলে আগামী কয়েক মাস ব্যবসা একেবারেই বন্ধ থাকবে। এতে কোটি কোটি টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হবে ব্যবসায়ীরা। তাই এই ড্রেন যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা যায় এবং ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে পৌর মেয়র ও সংসদ সদস্যের ইতিবাচক দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নতুন বাইপাস ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মো. হাবিল উদ্দিন বলেন, ঈদের আগে থেকে এখানে ড্রেন খননের কাজ শুরু করেছে সওজ। এর আগে সওজ থেকে ড্রেন খনন করে ফেলে রাখা হয়েছিল। তারা এই ড্রেন পাকাকরণের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমরা নিজেদের টাকায় অপরিকল্পিতভাবে খননকৃত ওই ড্রেনের গর্তে চোঙ্গাপুল দিয়ে মাটি ভরাট করে দিয়েছি। এতে পানি নিষ্কাশনে কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি। এই কাজ করতে আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এর ওপরেই খনন করে সেসব পুল তুলে দুইপাশে ইঁটের গাঁথুনি দিয়ে উন্মুক্ত করে রাখা হচ্ছে। ফলে সড়ক হতে দোকানপাটে যাতায়াতসহ বেচাকেনায় তৈরি হয়েছে বিরাট সমস্যা। যদি খননের পরপরই রিংকালভার্ট দিয়ে মাটি ভরাট করে সমান করা হতো তবে ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ লাঘব হতো অনেকাংশেই।

এ বিষয়ে জামালপুর সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সাগরময় রায় বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওইখানে চলমান রয়েছে ড্রেন খননের কাজ। চলতি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে ওই সড়কের একপাশে ড্রেন খনন করা হচ্ছে। আমাদের অধিভুক্ত জমিতেই চলছে ড্রেন খনন। এতে কোন দোকানমালিকের জমি পড়েনি। তবে ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে-বিষয়ে দৃষ্টি রাখা হবে।