যমুনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটুকু নির্মাণ হলেই রক্ষা পাবে দুই উপজেলার মানুষ

যমুনা নদীর বামতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাকী অংশটুকু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ছবি: বাংলারচিঠিডটকম

লিয়াকত হোসাইন লায়ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ইসলামপুর, বাংলারচিঠিডটকম

জামালপুরের ইসলামপুর পাথর্শী ইউনিয়নের শশারিয়াবাড়ী খানপাড়া থেকে পাশের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের সীমানা পর্যন্ত যমুনা নদীর বামতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাকী অংশটুকু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের টার্মিনাল হয়ে বালাগ্রাম পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি বিগত দিনে নির্মাণ করা হয়েছে। মাঝখানে পাথর্শী ইউনিয়নের শশারিয়াবাড়ী খানপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধটি নির্মাণ না হওয়ায় প্রতি বর্ষাকালে বন্যার পানির স্রোতে সাড়ে ৪শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাইলিংয়ে ধসসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়াও হাজার হাজার একর ফসলি জমি নষ্টসহ বসত ভিটায় বন্যার পানি উঠে তুলিয়ে যায় ঘরবাড়ি।

জানা গেছে, নদীভাঙন থেকে রক্ষাকবজ যমুনার বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ওপর স্থায়ী বাঁধ হলেও একটু জায়গা বাকী থাকায় যমুনার ফুঁসে উঠা পানি পাইলিংয়ের ওপর দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়। পাইলিং উপচে পানি প্রবল স্রোতে ও বালুতে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট, সেতু-কালভার্ড ও ঘরবাড়ি-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। যমুনার বাম তীরবর্তী অঞ্চলের বন্যা চলে গেলেও ক্ষত নিয়ে সারা বছর মানবেতর জীবন যাপন করে দুই উপজেলার মানুষ।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের সীমানা থেকে পাথর্শী ইউনিয়নের শশারিয়াবাড়ী খানপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাম রাস্তা বাকী অংশটুকু নির্মাণ করা হলে দুই উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার একর জমির ফসলসহ বাড়ি-ঘর রাস্তা সেতু-কালভার্ট বন্যার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।

ইউপি সদস্য লিখন খান, শাহ আলম, নূর মোহামদসহ এলাকাবাসী জানান, যমুনার বামতীরে বাকী অংশ বাঁধটুকু নির্মাণ করা হলে হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও ঘরবাড়িসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বন্যার কবল থেকে রক্ষা পাবে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাবাসী।

পাথর্শী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেখার আলম বাবুল জানান, যমুনার ভাঙ্গন থেকে বাঁচাতে যমুনার বামতীরে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পাইলিং নির্মাণ করেছেন সরকার। দেওয়ানগঞ্জ থেকে ইসলামপুরের কুলকান্দি, গুঠাইল হয়ে নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের উলিয়া, কাঠমা, হাড়গিলা পর্যন্ত বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে পাইলিংসহ রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাজার হাজার একর ফসলি জমি ঘর-বাড়িসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বন্যার কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে। ইসলামপুর-দেওয়াগঞ্জ সীমানা প্রায় এক কিলোমিটার বাকী অংশ বাঁধটুকু নির্মাণ করতে পারলেই দুই উপজেলার মানুষ বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়াও তিনটি ফসল ঘরে তুলতে পারবে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়নের সীমানা থেকে পাথর্শী ইউনিয়নের শশারিয়াবাড়ী খানপাড়া পর্যন্ত স্থানটি পরিদর্শন করেছি। প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধ কাম রাস্তাটি নির্মাণ করা হলে দুই উপজেলার মানুষ বন্যা থেকে রক্ষা পাবে। আমরা এ বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।