নকলায় বাঁধের পাশের নদী থেকে বালু তোলার অভিযোগ, হুমকিতে বাঁধ

শফিউল আলম লাভলু
নিজস্ব প্রতিবেদক, নকলা (শেরপুর), বাংলারচিঠিডটকম

শেরপুরের নকলার নারায়ণখোলা এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের মানুষের বসতবাড়িসহ ফসলি জমি রক্ষার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ। কাজটি করছেন রংপুরের ইউনাইটেট ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাইরে থেকে বালু এনে জিও ব্যাগের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ করা করার কথা থাকলেও নির্মাণাধীন বাঁধের অপর পাশ থেকে নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে সেই বালু দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, দুই বছর আগে একই জায়গাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগের মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণ করেছিল। ঠিক অপর পাশে নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন ও নদীতে পানির প্রবল স্রোতের কারণে বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এবার নদীতে তেমন কোন স্রোত নেই। কিন্তু পাশের ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। বাঁধ ভেঙ্গে আবার সেই গর্ত ভরাট হচ্ছে। নদী পাড়ের মানুষের বসতবাড়িসহ ফসলী জমি যেকোন মুহূর্তে আবারো চলে যেতে পারে নদী গর্ভে।

উপজেলা প্রশাসন নদীতে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে বারবার নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরেও রাতের আঁধারে ও ভোরে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের। সেই বালু দেওয়া হচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। ৩ জুন সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায় নদীতে অবৈধ ড্রেজার। উত্তোলন করা হচ্ছিল বাঁধ নির্মাণের বালু।

চরঅষ্টধর ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) মো. উজ্জল মিয়া জানান, সকালে সংবাদ পাই ব্রহ্মপুত্র নদে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সাথে সাথে সেটা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু রাতের আঁধারে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আবার ভোর সকালে নদ থেকে ড্রেজার উঠিয়ে ফেলে। তবে আজকে বন্ধ করা হয়েছে এবং সাথে সাথে ইউএনও স্যারকে জানানো হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউল রহমান বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বালু কোথা থেকে এনে জিও ব্যাগে দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করবে সেটা তাদের বিষয়। কাজো কোন অনিয়ম থাকলে সেটা আমাদের দেখার বিষয়। আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করতেছি।তবে একাধিকবার যোগাযোগ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, নারায়ণখোলা এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রস্তুতির সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে বন্ধ করা হয়েছে এবং নদী থেকে ড্রেজার সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পরেও যদি নদেতে ড্রেজার পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোপূর্বে অবৈধ বলু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ নিয়মিত মামলাও দায়ের করা হয়েছে।