বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই

বীরপ্রতীক তারামন বিবি

বাংলারচিঠি ডটকম ডেস্ক॥
একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। ৩০ নভেম্বর রাতে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়।

জানা গেছে, তারামন বিবি দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট আর ডায়েবেটিসে ভুগছিলেন। গত মাসেও তাকে ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। ৩০ নভেম্বর রাতে তার অবস্থা খারাপের দিকে যায়। রাত একটা ২৭মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি তার স্বামী আবদুল মজিদ, এক মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।

বীরপ্রতীক তারামন বিবির মুত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন।

জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম পৃথকভাবে তারামন বিবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।

রাষ্ট্রপতি মরহুমার রুহের শান্তি ও মুক্তি কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, জাতি এবং স্বাধীনতা প্রিয় জনগণ চিরকাল তারামন বিবিকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবির অসামান্য অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে তারামন বিবি অস্ত্র হাতে নিয়ে যে সাহসী ভূমিকা পালন করেছিলেন, তার সেই অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

১ ডিসেম্বর দুপুরে রাজিবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া তালতলা কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তারামন বিবির দাফন হওয়ার কথা।

তার আগে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এই মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন।

কুড়িগ্রামের শংকর মাধবপুরে ১১ নম্বর সেক্টরে কমান্ডার আবু তাহেরের অধীনে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তারামন বিবি। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকিস্তানিদের খবর সংগ্রহের পাশাপাশি অস্ত্র হাতে সম্মুখ যুদ্ধেও তিনি অংশ নিয়েছেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৩ সালে তারামনকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে তারামন বিবির হাতে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
সূত্র : বাসস