নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশ সিইসির

বাংলারচিঠি ডটকম ডেস্ক॥
নির্বাচন যেন কোনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।

তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে। তবে নির্বাচন কমিশন তা নজরদারি করবে। ইতোমধ্যেই অভিযোগ আসা শুরু করেছে। তবে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ভালোভাবে যাচাই না করে কারও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নির্বাচন যেন কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ২২ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা-বিষয়ক বিশেষ সভার শুরুতে সিইসি এসব কথা বলেন। সভায় তিনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ১২ দফা নির্দেশনা দেন।

সিইসি বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের পর মাঠ পর্যায়ে ছোট পরিসরে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। অন্যান্য বাহিনী ও ম্যাজিস্ট্রেটকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন।

পুলিশকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহ না করতে নিষেধ করে তিনি বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহ করার কথা আমরা বলিনি। এটা আপনারা করবেন না। কারণ, এটা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। যারা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, তারা বিব্রত হন। আমরা এটা চাই না। যদি তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয়, তবে গোপন সূত্র ব্যবহার করে সংগ্রহ করতে পারেন।

তফসিল ঘোষণার পর কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার না করার নির্দেশ দিয়ে সিইসি বলেন, এখন কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার বা কারো বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা বা গ্রেপ্তার করা যাবে না। আশা করি, আপনারা এটা করছেনও না।

নুরুল হুদা বলেন, মামলার বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে শুরুতে ৪ থেকে ৫ হাজার জনের একটি তালিকা দেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ওই সব মামলা ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগের। আর এবারের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে করা মামলার পূর্ণাঙ্গ তথ্য বিএনপির পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি। তাই ব্যবস্থা নিতে পারছি না।

তিনি বলেন, এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, সব দল এতে অংশ নেবে। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রজাতন্ত্রের সবাই মিলেই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কাজ করতে হবে। নির্বাচনের সিংহভাগ দায়িত্ব পুলিশের থাকে। ভোটারের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদের ওপরই বেশি থাকে।

সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা রোধ করা ঐতিহ্যগতভাবেই আপনাদের দায়িত্ব। এবারও দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধান মতে কর্তৃত্ব নয়, বিবেক মতো কাজ করতে হবে।’

সভায় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীসহ ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, অতিরিক্ত সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইজিপি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র : বাসস