ক্যারিবিয়দের বিপক্ষে দীর্ঘ দিনের বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর মিশন শুরু করছে বাংলাদেশ

বাংলারচিঠি ডটকম ডেস্ক॥
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র একবার টেস্ট সিরিজ জিততে পেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তাও ২০০৯ সালে। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দীর্ঘ দিনের টেস্ট সিরিজ জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘোচাতে চায় টাইগাররা। এমন লক্ষ্য নিয়েই ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া দুই ম্যাচের সিরিজে নিজেদের মিশন শুরু করছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম টেস্টটি। খেলা শুরু হবে সকাল সাড়ে নয়টায়।

২০০২ সালে প্রথম দ্বিপক্ষীয় টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটি ছিলো বাংলাদেশের মাটিতে। দুই ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করে ক্যারিবীয়রা। এরপর ছয়টি টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয় দু’দল। এরমধ্যে মাত্র একবার জিততে পারে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে বাংলাদেশ। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আর কোন টেস্ট সিরিজই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সেই বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর মিশন।

তবে কাজটি বেশ কঠিনই হবে বাংলাদেশের কাছে। সদ্যই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু জিততে পারেনি। পিছিয়ে পড়েও টেস্ট সিরিজ ড্র’তে শেষ করে টাইগাররা।

সিলেটের অভিষেক টেস্টে ১৫১ রানের বড় ব্যবধানে জিম্বাবুয়ের কাছে হারে বাংলাদেশ। এরপর ঢাকা টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ২১৮ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ হার এড়ায় মাহমুদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন দলটি।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অংশ নেননি বাংলাদেশের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। দু’জনই হাতের ইনজুরিতে ভুগছিলেন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবেই দলে সুযোগ পেয়েছেন সাকিব। তবে সাকিবের একাদশে থাকাটা এখনো নিশ্চিত নয়। ম্যাচের দিন সকালে সাকিবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্বান্ত নিবে টিম ম্যানেজমেন্ট।

চলতি বছর তিনটি টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে বড় ফরম্যাটে খেলা শুরু করে টাইগাররা। ১-০ ব্যবধানে সিরিজটি হারে তারা। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজে উড়ে যায় দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে। সেখানে গিয়ে যাচ্ছেতাই পারফরমেন্স দেখায় বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের চার ইনিংসে বাংলাদেশের দলীয় রানগুলো ছিলো এমন- ৪৩, ১৪৪, ১৪৯ ও ১৬৮। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সামনে পেয়ে ঐ সিরিজের স্মৃতি চোখে ভেসে উঠাই স্বাভাবিক। তাই দেশের কন্ডিশনের সুবিধা নিয়ে ঐ দুঃস্মৃতি ভুলে যেতে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশের মতই চলমান বছর টেস্ট ফরম্যাটে তিনটি সিরিজ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দেশের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করে ক্যারিবীয়রা। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ২-০ ব্যবধানে জয় পায় তারা। তবে গেল অক্টোবরে ভারতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় ক্যারিবীয়রা।

ভারতের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা ভুলে গিয়ে নতুনভাবে লড়াই শুরু করতে করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ চার টেস্ট সিরিজে জয়, আত্মবিশ্বাসী করছে ক্যারিবীয়দের। তবে সিরিজ শুরুর আগে বড় ধরনের ধাক্কাই পেতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ইনজুরির কারনে বাংলাদেশ সফরে আসেননি নিয়মিত অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। তাই দলের দায়িত্ব পালন করবেন ওপেনার ক্রেইগ ব্রার্থওয়েট।

বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিথুন, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, সাদমান ইসলাম, খালেদ আহমেদ এবং নাঈম হাসান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : ক্রেইগ ব্রাফেট (অধিনায়ক), সুনীল অ্যামব্রিস, দেবেন্দ্র বিশু, রোস্টন চেজ, শেন ডওরিচ, শানন গ্যাব্রিয়েল, জাহমার হ্যামিল্টন, শিমরোন হেটমায়ার, শাই হোপ, শিরমন লুইস, কেমো পল, কাইরেন পাওয়েল, রেমন রেইফার, কেমার রোচ ও জোমেল ওয়ারিকান।
সূত্র : বাসস