সারাদেশে পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটে দুর্ভোগ চরমে

বাংলারচিঠি ডটকম ডেস্ক॥
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংস্কারসহ আটদফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে সারা দেশে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক বন্ধ রয়েছে। এতে চরম জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর আন্তঃনগর টার্মিনালগুলো থেকে কোনো বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি।খবর ইত্তেফাকের।

রাজধানী ঢাকায়ও বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। বিআরটিসির দুএকটি বাস চললেও তা নিতান্তই অপ্রতুল হওয়ায় বেশিরভাগ নগরবাসীকে নির্ভর করতে হচ্ছে অ্যাপসভিত্তিক পরিবহন সার্ভিস বা পায়ের উপর। প্রধান সড়কগুলোতে কিছু রিকশা চলাচল করলেও অফিসগামী যাত্রী আর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যানবাহনের আশায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে প্রতিটি মোড়ে।

এদিকে পরিবহন শ্রমিকরা এই কর্মসূচিকে কর্মবিরতি বললেও রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট তারা অন্য যানবাহন চলাচলেও বাধা সৃষ্টি করছেন। বিআরটিসিরি ডিপোগুলো থেকে জানানো হয়, তাদের বাসগুলো আটকে দেয়া হচ্ছে। এমনকি বিক্ষোভরত পরিবহনশ্রমিকরা এসব বাসের চালক ও সহকারীদের মারধর করছে। গাবতলী ডিপোর ব্যবস্থাপক মো. মনিরুজ্জামান অভিযোগ করেন, পরিবহনশ্রমিকরা কোনো গাড়িগুলোকে পথে আটকে দিচ্ছে। সকাল থেকে অনেকগুলো বাস ছাড়া হলেও সেগুলো পথের বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছে।

২৭ অক্টোবর বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পরিবহন শ্রমিক সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, সহ-সভাপতি ছাদিকুর রহমান হিরুসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।

অপরদিকে বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আলহাজ মুকবুল আহমেদ ও সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম পণ্যবাহী যান চালানোর জন্য মালিক শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ পণ্যবাহী যানচলাচল সচল রাখার ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

২৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পূর্ব নির্ধারিত এ সমাবেশে যোগ দিতে বিকেল তিনটার পর থেকে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নেন দেশের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকে।

পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী ও সহ-সভাপতি ছাদিকুর রহমান হিরু বলেন, আমরা ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি কর্মসূচি ঘোষণার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আলোচনার জন্য বার বার অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু আমাদেরকে কেউ আলোচনার জন্য ডাকেনি। এ প্রেক্ষাপটে আমরা সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে যদি আমাদের আলোচনার জন্য ডাকা না হয় তবে ৩০ অক্টোবর মিটিং ডেকে আমরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।

মালিক- শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ৮ দফা : সড়ক দুর্ঘটনার সব মামলা জামিনযোগ্য করা, শ্রমিকদের অর্থদণ্ড ৫ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান, সড়ক দুর্ঘটনার জটিলতর মামলার তদন্ত কমিটিতে শ্রমিক প্রতিনিধি রাখা, ড্রাইভিং লাইসেন্সের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণির স্থলে পঞ্চম শ্রেণি করা, কাগজপত্র চেকিং এর নামে সড়কে পুলিশের অহেতুক হয়রানি বন্ধ, ওয়েস্কেলে জরিমানার পরিমাণ কমানো ও কারাদণ্ডের বিধান বাতিল প্রভৃতি।
সূত্র : ইত্তেফাক